কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গতকাল শুক্রবার এক নারী চিকিৎসকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন হাসপাতালটির চিকিৎসকেরা। এরই মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নিহত ওই চিকিৎসকের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার সোদপুরে। তাঁর মা–বাবা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে তাঁদের মেয়ের ডিউটি ছিল। রাত দুইটায় নৈশভোজ সেরে জরুরি বিভাগের চারতলায় একটি সম্মেলনকক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। শুক্রবার সকালে সেখানে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
৩১ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকের বাড়িতে ফোন করে জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকদের অভিযোগ, তাঁদের সহকর্মীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। নিরপেক্ষ ময়নাতদন্ত এবং হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান তাঁরা।
এই দাবিতে সোচ্চার হয় বিজেপিও। কলকাতা পৌর করপোরেশনের বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষ এবং বিজেপি নেত্রী ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল হাসপাতালে গিয়ে আন্দোলনে বসেন। গতকাল বিকেল পর্যন্ত আটকে রাখেন ওই চিকিৎসকের মরদেহ।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারও দ্রুত ছুটে যান হাসপাতালে। তাঁরা আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই মৃত্যু–রহস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে এবং বিশেষ চিকিৎসক দিয়ে ময়নাতদন্ত হবে। এরপরই বিক্ষোভকারীরা ওই চিকিৎসকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যান।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই চিকিৎসকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে শ্বাসরোধ করার প্রমাণও পাওয়া গেছে। শরীরে পাওয়া গেছে রক্তক্ষরণের চিহ্ন। এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। গড়ে তোলা হয়েছে পুলিশের একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি।