ভারতের উত্তর প্রদেশের সম্ভলে যাওয়ার পথে দিল্লি-উত্তর প্রদেশের গাজীপুর সীমান্তে আটকে দেওয়া হয় কংগ্রেস নেতা রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। আজ বুধবার
ভারতের উত্তর প্রদেশের সম্ভলে যাওয়ার পথে দিল্লি-উত্তর প্রদেশের গাজীপুর সীমান্তে আটকে দেওয়া হয় কংগ্রেস নেতা রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। আজ বুধবার

রাহুল–প্রিয়াঙ্কাকে সম্ভলে যেতে দিল না উত্তর প্রদেশ পুলিশ

ভারতের লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদেরাকে উত্তর প্রদেশের সম্ভলে যেতে দিল না রাজ্যের পুলিশ। আজ বুধবার সকালে যাত্রা করলেও দিল্লি–উত্তর প্রদেশের গাজীপুর সীমান্তে আটকে দেওয়া হলো তাঁদের গাড়িবহর।

রাজ্য পুলিশের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বার্থেই এই সতর্কতা। সম্ভলের জামা মসজিদে জরিপ করা নিয়ে সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে গত ২৪ নভেম্বর পাঁচজন নিহত হন। তারপর থেকে সেখানে বাইরের কোনো রাজনীতিক নেতাকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

রাহুল–প্রিয়াঙ্কার গাড়ি বহর আটকে দেওয়ার ফলে আজ বুধবার দিনভর দিল্লি–মিরাট এক্সপ্রেসওয়ে অচল হয়ে পড়ে। দেখা দেয় ব্যাপক যানজট। সীমান্তে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পর কংগ্রেস নেতারা দিল্লি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

উত্তর প্রদেশের সম্ভলে জামা মসজিদের তলায় হিন্দু মন্দির আছে দাবি জানিয়ে নিম্ন আদালতে এক আবেদন জমা পড়েছিল। আবেদনের আরজি, মসজিদে জরিপ করা হলেই দাবির সত্যতা নিরুপণ করা সম্ভব হবে। আবেদন গ্রহণ করে নিম্ন আদালত জরিপের নির্দেশ দিলে স্থানীয় জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। তাতে মারা যান পাঁচজন। সেই থেকে সেখানে উত্তেজনা রয়েছে।

হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে সম্ভল থেকে নির্বাচিত সমাজবাদী পার্টির (এসপি) লোকসভা সদস্য জিয়া উর রহমান ও সেই দলের স্থানীয় বিধায়ক সোহেল ইকবালসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই ঘটনার পর নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যেতে চেয়েছিলেন এসপি নেতা ও রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসন তাঁকে যেতে দেননি। আজ বুধবার রাহুল–প্রিয়াঙ্কাকেও দিল না।

পুলিশ পথ রোধ করার পর রাহুল অনুরোধ করেছিলেন, কংগ্রেসের ৪/৫ জনের একটি প্রতিনিধিদলকে নিহতদের পরিবারের কাছে যেতে দেওয়া হোক। পুলিশ রাজি হয়নি। রাহুল একা যাওয়ার অনুমতিও চান। বলেন, বিরোধী নেতা হওয়ায় এটা তাঁর দায়িত্ব ও কর্তব্য। পুলিশ তাতেও রাজি নয়। পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে ওই অনুমতি দেওয়া যাবে না। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে।

দিল্লি থেকে রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সম্ভল রওনা হয়েছিলেন উত্তর প্রদেশের পাঁচ কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্যও। তাঁদের আটকাতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন জেলা শাসক রাজেন্দ্র পেনসিয়া। দিল্লির কাছের গৌতম বুদ্ধ নগর ও গাজিয়াবাদের পুলিশকে অনুরোধ করেছিলেন, কংগ্রেস নেতারা যাতে উত্তর প্রদেশে ঢুকতে না পারেন। একই অনুরোধ জানানো হয়েছিল আমরোহা ও বুলন্দশহর পুলিশকেও।

উত্তর প্রদেশ পুলিশের এই আচরণের বিরোধিতা করে কংগ্রেস সরব হয়েছে। কংগ্রেস নেতা কে সি বেনুগোপাল ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে বলেন, শাসক দল ঘৃণার বাতাবরণ সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস ভালোবাসার বাতাস ছড়িয়ে দিতে চায়। পীড়িতদের পাশে দাঁড়ানোটাই মানবিকতা।

সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, রাজনৈতিক দলের নেতাদের সম্ভল যেতে দেওয়া উচিত। তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। মানুষ ভরসা পাবে। অখিলেশ আগেই বলেছিলেন, সম্ভলে যা কিছু হয়েছে, তা রাজ্য সরকারের জন্য। তারাই মূল অপরাধী।