ঘুষকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে অভিযোগ আনার পর এই প্রথম এ নিয়ে কথা বললেন আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি। গতকাল শনিবার ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় শহর জয়পুরে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক আইনকানুন প্রতিপালনে বৈশ্বিক মান অনুসরণে তাঁর কোম্পানি অঙ্গীকারবদ্ধ।
সাড়ে ২৬ কোটি ডলারের ঘুষকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ফেডারেল কৌঁসুলিরা ২০ নভেম্বর গৌতম আদানি ও তাঁর কয়েকজন সহযোগীকে অভিযুক্ত করেন। এ অভিযোগ মাত্র দুই বছরের মধ্যে ভারতীয় কোম্পানিটির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে আসে। এ কারণে ভারত ও দেশটির বাইরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার পর আদানি গ্রুপের সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎ চুক্তি পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছে ভারতের একটি রাজ্য। আদানিতে নতুন করে বিনিয়োগ না করার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্সের টোটল এনার্জিস। আদানি–বিতর্ক নিয়ে ভারতের পার্লামেন্ট অধিবেশনও বিঘ্নিত হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গৌতম আদানি বলেন, ‘আদানি গ্রিন এনার্জি কোম্পানির ব্যবসায়িক আইনকানুন প্রতিপালন নিয়ে দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমরা অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছি। এবারই প্রথম এ ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে আমরা পড়িনি।’
মার্কিন কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, গৌতম আদানি, তাঁর স্বজন ও আদানি গ্রিনের নির্বাহী পরিচালক সাগর আদানি এবং আদানি গ্রিনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ভিনেত এস জেইন ভারতে বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি নিশ্চিত করতে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনায় অংশ নেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে তহবিল সংগ্রহের সময় মার্কিন বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করেন।
অবশ্য আদানি গ্রুপ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ মন্তব্য করে সব ধরনের আইনি আশ্রয় নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি।
অনুষ্ঠানে গৌতম আদানি বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে পারি, প্রত্যেকটি আঘাত আমাদের আরও শক্তিশালী করবে এবং প্রতিটি বাধা হবে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে আদানি গ্রুপের সামনে এগিয়ে যাওয়ার একেকটি ধাপ।’
আদানি গ্রুপের চেয়ারপারসন বলেন, ‘এখনকার দুনিয়ায় প্রকৃত সত্যের চেয়ে নেতিবাচক খবর দ্রুত ছড়ায়। আমরা আইনি প্রক্রিয়া এগিয়ে যাওয়ার কাজ করছি। আমি আবারও ব্যবসার আইনকানুন প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মান বজায় রাখার বিষয়ে আমাদের অকুণ্ঠ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।’
ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর ভারতীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীটি বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে। আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকে গত বুধবার জানানো হয়, শেয়ারবাজারে তাদের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার কারণে তারা ৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার হারিয়েছে। অবশ্য পরে কিছু অংশীদার ও বিনিয়োগকারী কোম্পানিটির পাশে থাকার ঘোষণা দিলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে আদানি গ্রুপ।