ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

সীমান্তে শান্তি ছাড়া ভারত–চীন সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না: জয়শঙ্কর

ভারত–চীন সম্পর্কের সামান্য উন্নতি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ২০২০ সালে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষের পর ক্রমাগত কূটনৈতিক আলোচনার ফলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই উন্নতি দেখা গেছে। তবে তিনি এ–ও বলেন, সীমান্তে শান্তি ছাড়া দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে না।

জয়শঙ্কর বলেন, আলোচনার মধ্য দিয় ভারত চায় সীমান্ত সমস্যার একটা যুক্তিগ্রাহ্য, যথার্থ ও দুই দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভারতীয় জওয়ানেরা সাহসের সঙ্গে চীনের মোকাবিলা করে এসেছেন। সেই কৃতিত্ব স্বীকার করতেই হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কীভাবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যকরভাবে করা যায়, কীভাবে উত্তেজনা ও সেনা সমাবেশ আরও কমানো যায়—ভবিষ্যতে তা দেখা হবে। দুই দেশের বোঝাপড়ার ফলে এবার অন্য বিষয়ের দিকেও নজর দেওয়া যাবে।

সাড়ে চার বছর আগের সংঘর্ষের পর দুই মাস আগে অক্টোবরে ভারত ও চীন লাদাখ সীমান্তের কোনো কোনো স্থানে বোঝাপড়ায় আসে। দুই দেশ তা ঘোষণাও করে। সেই সমঝোতার পর এই প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে বিবৃতি দিলেন। তবে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বিরোধীদের কোনো প্রশ্নের জবাব তিনি দেননি। বস্তুত বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীসহ কাউকে কোনো প্রশ্নও করতে দেওয়া হয়নি।

গালওয়ানে সংঘর্ষের পর ভারত–চীন সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আজ পর্যন্ত সংসদে কোনো বিতর্কের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের লাদাখ পরিদর্শনে যাওয়ার দাবিও মেনে নেওয়া হয়নি।

শীতকালীন অধিবেশনের শুরু থেকে উত্তাল সংসদ অবশ্য আজ মঙ্গলবারই প্রথম শান্ত হলো। আদানি ঘুষকাণ্ড, সম্ভল সংঘর্ষ, মণিপুর পরিস্থিতির মতো বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য মুলতবি প্রস্তাবের দাবি না মানায় এত দিন সভার কাজ মুলতবি করে দেওয়া হচ্ছিল। আজ মঙ্গলবার দেখা গেল, দাবি না মানায় প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীরা কিছু সময়ের জন্য সভা থেকে ওয়াক আউট করেন। কক্ষের বাইরে কিছু সময় বিক্ষোভ দেখিয়ে পরে অধিবেশন কক্ষে ফিরে যান।

বিরোধী মনোভাবের এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির সিদ্ধান্ত। দুই দল মনে করে, আদানি নিয়ে কংগ্রেসের আন্দোলনের ফলে অন্যান্য সমস্যার কথা তোলা যাচ্ছে না। ওই দুই দলের নেতারা জানান, তাঁরা দিনের পর দিন সংসদ অচল রাখার পক্ষপাতী নন। বরং মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরতে আগ্রহী।

এই দুই দল কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে গলা মেলাতে রাজি হয়নি। দুই দলের প্রতিনিধিরা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের ডাকা বৈঠকেও গরহাজির থাকেন। বিরোধী অনৈক্য প্রকট না করে কংগ্রেসও তাই সভা চালানোর দিকে মনোযোগী হয়।