ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে রাজ্যের কয়েকজন বিরোধী নেতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, হিমন্ত বিশ্বশর্মা আসামে ‘ধর্ম ও বর্ণের’ নিরিখে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরোধ ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।
এর আগে আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তিনি সুনির্দিষ্ট পক্ষ নেবেন। মিয়া মুসলমানদের পুরো আসাম দখল করে নিতে দেবেন না।’ এমন মন্তব্যের একদিন পরই হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে ‘দাঙ্গা বাধানোর’ অভিযোগ আনলেন বিরোধী নেতারা।
গুয়াহাটি (ইস্ট) পুলিশের কর্মকর্তা মৃণাল দেকা নিশ্চিত করে বলেন, আসামের দিশপুর পুলিশ স্টেশনে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যদিও গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইউনাইটেড অপজিশন ফোরামের পক্ষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছেন আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ভূপেন বোরাহ এবং আসাম জাতীয় পরিষদের নেতা লুরিনজ্যোতি গগৈ। আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ ফোরাম এটা।
আসাম থেকে রাজ্যসভার স্বতন্ত্র সদস্য অজিত ভূঁইয়া, আসাম বিধানসভার বিরোধী নেতা দেবব্রত শাইকিয়া এবং ধুবড়ি আসনের কংগ্রেসের সংসদ সদস্য (এমপি) রাকিবুল হুসেইন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনার কথা বলেছেন।
এসব নেতা অভিযোগে বলেছেন, হিমন্ত বিশ্বশর্মা ‘অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র’ করছেন। রাজ্যে অশান্তি ছড়িয়ে দিতে চান তিনি। তাঁকে এখনই ‘গ্রেপ্তার কিংবা নিবৃত’ করা না গেলে আসামে দাঙ্গার মতো একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই হিমন্ত বিশ্বশর্মার বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করার আরজি তাদের।
আসামের বিভিন্ন জায়গায় চাপা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২২ আগস্ট রাজ্যের নওগাঁও জেলায় ১৪ বছরের একটি মেয়ে শিশু সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। হিমন্ত বিশ্বশর্মা ও তাঁর সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেন।
যদিও অভিযুক্তরা বাঙালি–মুসলমান। এ ঘটনাকে ‘আদিবাসীদের ওপর আক্রমণ’ বলে মনে করছেন অনেকেই। ওই ঘটনার অভিযোগেও এমনটা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আসামের শিবসাগর জেলাতেও সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা রয়েছে। এসবের প্রকাশ ঘটেছে মুখ্যমন্ত্রীর কথা এবং তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে।