দুর্গাপূজাকে ইউনেসকোর আবহমান ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি উদ্‌যাপনে আজ কলকাতায় মহামিছিল
দুর্গাপূজাকে ইউনেসকোর আবহমান ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি উদ্‌যাপনে আজ কলকাতায় মহামিছিল

দুর্গাপূজাকে ইউনেসকোর স্বীকৃতি, মহামিছিলে ভাসল কলকাতা

ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজা বা শারদীয় দুর্গোৎসবের এক মাস আগেই মহামিছিল আর রঙিন শোভাযাত্রায় আজ ভেসে গেল কলকাতা। নগর সেজে উঠল নতুন করে, রঙিন সাজে। লাখো মনুষের মিছিলে প্রকম্পিত হলো কলকাতা। বেজে উঠল পূজার ঘণ্টা। কলকাতার দুর্গাপূজো ইউনেসকোর ‘আবহমান ঐতিহ্য’ উৎসবের স্বীকৃতি পেয়েছিল। সে উপলক্ষেই আজ বৃহস্পতিবার কলকাতাসহ গোটা বাংলায় আয়োজন করা হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ মহামিছিলের।  

আজ বেলা দুইটায় মহামিছিল শুরু হয় কলকাতার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত বাসভবন জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি থেকে। এটি শেষ হয় ধর্মতলার ঐতিহাসিক রেড রোডে। এ মহামিছিলে নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও এ মহামিছিলে হাঁটেন প্রায় চার কিলোমিটার। জোড়াসাঁকো থেকে মেয়ো রোড।
বাংলার এ দুর্গোৎসবকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেসকো বিশ্বের এক ঐতিহ্যবাহী উৎসবের স্বীকৃতি দেয়। ইউনেসকোর এ স্বীকৃতি উদ্‌যাপন করতেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এ আয়োজন করে।

মহামিছিলে নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সদস্যদের নিয়ে আজকের মিছিলে অংশ নেয় কলকাতার বিভিন্ন পূজা কমিটি। যোগ দেয় কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংস্থা। শোভাযাত্রা ও আনন্দমিছিলে ছিল পথনাটক, ছৌনৃত্য, লোকনৃত্য, আদিবাসী নৃত্য, লোকগীতিসহ নানা আয়োজন। ঢাকঢোল পিটিয়ে ধামসা–মাদল বাজিয়ে নাচগান, উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি, ধুনুচি নাচ, বাউলসংগীত চলেছে পথজুড়ে। যোগ দেয় স্কুল–কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ মিছিল ও রঙিন শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয় রাজ্যের সব জেলা সদরে।
আজকের এ মহামিছিল ঘিরে কলকাতার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। নিয়োগ করা হয় তিন হাজার পুলিশ।

মহামিছিলের পর ইউনেসকোর প্রতিনিধির হাতে উপহার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাশে ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম

মিছিল শেষে রেড রোডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ইউনেসকোর প্রতিনিধিরা। তাঁদেরও সংবর্ধনা দেওয়া হয়। রাজ্য সরকার তাঁদের হাতে তুলে দেয় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের নানা উপঢৌকন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা আজ বলেন, ‘বাংলার এ উৎসব ইউনেসকো স্বীকৃতি দেওয়ায় আমরা গর্বিত। তাদের জানাচ্ছি আমাদের অভিনন্দন। আজ বিশ্বের কাছে আমরা নতুন করে আমাদের এক ঐতিহ্যের দ্বার খুলে দিলাম। তৈরি করলাম নতুন এক ইতিহাস।’