মণিপুর রাজ্যের পূর্ব ইম্ফল জেলার নিউ চেকওন অঞ্চলে নতুন করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতকারীরা চারটি বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আসাম রাইফেলস ও মণিপুর পুলিশের যৌথ বাহিনী নিউ চেকওনে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার পরপরই কারফিউর সময়সীমা পরিবর্তন করা হয়েছে। পরে রাজ্যের সাবেক এক এমএলএ–সহ তিনজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি ও নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে। মেইতেই সম্প্রদায়ের দীর্ঘদিনের দাবি, তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়া। সম্প্রতি হাইকোর্ট মেইতেই সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় আনা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেন। এরপরই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। ৩ মে সেখানে সহিংসতা শুরু হয়। তিন দিনের সহিংসতায় ৭০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন অনেকে। হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। প্রায় ৩০০ গির্জা ও গির্জা–সংলগ্ন দপ্তর ক্ষতিগ্রস্ত বা পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
তিন সপ্তাহ হয়ে গেলেও সহিংসতা থামেনি। প্রধানত সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং প্রধানত হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত মেইতেইদের সঙ্গে কুকিসহ অন্য উপজাতিদের বিরোধের কারণেই এ ঘটনা ঘটে। এ কারণে গতকাল রোববার স্থানীয় প্রশাসন আরও পাঁচ দিনের জন্য ইন্টারনেট–সেবা বন্ধ করে দেয়।
রাজ্য প্রশাসন গতকাল বলেছিল, মিথ্যা গুজবের ফলে জীবনহানি, সম্পত্তির ক্ষতি এবং জনসাধারণের শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রবল ব্যাঘাত ঘটার একটি আসন্ন বিপদ রয়েছে। এ কারণেই ইন্টারনেট পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
৩ মে শুরু হওয়া সহিংসতার ঘটনায় রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয়েছিল। তবে পরে তা সকাল ছয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছিল। আজ নতুন করে সহিংসতার ঘটনায় শিথিলের সময়সীমা কমিয়ে বেলা দুইটা পর্যন্ত করা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং সাংবাদিকদের বলেন, সাবেক এমএলএ–সহ সশস্ত্র তিনজন দোকানদারদের দোকান বন্ধ করতে চাপ দিচ্ছিলেন। আসাম রাইফেলসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে রাজ্য পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাঁদের অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে।