ভারতের ওডিশায় দুর্ঘটনাকবলিত করমন্ডল এক্সপ্রেস বালাসোরের বাহানাগা স্টেশন এলাকায় বাড়তি লাইনে (লুপ লাইন) প্রবেশের জন্য সবুজসংকেত পেয়েছিল। এ সময় ট্রেনটির অতিরিক্ত গতি ছিল না বলেও জানিয়েছে ভারতের রেল কর্তৃপক্ষ।
ভারতের রেলওয়ে বোর্ডের সংকেতবিষয়ক মুখ্য নির্বাহী পরিচালক সন্দীপ মাথুর এবং পরিচালন ও ব্যবসা উন্নয়নবিষয়ক কমিটির সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা আজ রোববার এ দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যায় এ কথা বলেছেন।
জয়া ভার্মা সিনহা বলেছেন, করমন্ডল এক্সপ্রেসের জন্য দিকনির্দেশনা, পথ ও সংকেত নির্ধারিত ছিল। তিনি বলেন, ‘সবুজসংকেত অর্থ, চালক জানবেন তাঁর সামনের পথ পরিষ্কার এবং অনুমোদিত সর্বোচ্চ গতিতে তিনি সামনে এগিয়ে যেতে পারেন। সেখানে অনুমোদিত গতিসীমা ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার এবং তিনি ট্রেনটি চালাচ্ছিলেন ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার গতিতে। ইঞ্জিনের তথ্যভান্ডার (লোকো লগস) থেকে আমরা এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি।’
দুটি যাত্রীবাহী ট্রেনের কোনোটির গতি বেশি ছিল না উল্লেখ করে রেলের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিকভাবে যেটা পাওয়া গেছে, তা হলো সংকেতের বিষয়। তিনি বলেন, এখানে একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে করমন্ডল এক্সপ্রেস। এ ট্রেন মালবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে পড়ে এবং এর কোচগুলো ওই ট্রেনের ওপর উঠে যায়। মালবাহী ট্রেনটিতে লোহা বোঝাই ছিল। সে কারণে সেটি ছিল খুবই ভারী। এতে সংঘর্ষের পুরো আঘাত সেটি সামলে নেয়। ফলে করমন্ডল এক্সপ্রেসের বগিগুলো উল্টে গিয়ে তৃতীয় লাইনে পড়ে এবং সেগুলো বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেনের কয়েকটি বগির সঙ্গে ধাক্কা খায়।
মালবাহী ট্রেনে লোহা বোঝাই থাকার কারণে দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ওডিশার বালাসোরের বাহানাগায় এ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা তিন শর কাছাকাছি পৌঁছেছে। আজ করমন্ডল এক্সপ্রেস ও যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের বগির ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে আরও পাঁচজনের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯১। তাঁদের মধ্যে ৫৬ জনের অবস্থা গুরুতর।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনি বৈষ্ণভ, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনাকে তাঁরা দেশের সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।