ভারতের এক টিভি উপস্থাপককে বিয়ে করার জন্য তাঁকে অনুসরণ ও অপহরণের অভিযোগে দেশটির হায়দরাবাদ থেকে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলছে, ওই উপস্থাপকের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে তাঁর গাড়িতে অবস্থান শনাক্তকারী একটি যন্ত্রও স্থাপন করেছিলেন ওই নারী। তিনি কয়েকজন অপহরণকারীও ভাড়া করেছিলেন।
৩১ বছর বয়সী ওই নারী ডিজিটাল মার্কেটিং–সংক্রান্ত একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। দুই বছর আগে বিয়ে ও পাত্র-পাত্রীর খোঁজসংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটে ওই টিভি উপস্থাপকের ছবি দেখে তাঁকে পছন্দ করে ফেলেন তিনি।
এরপর ওই ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তিনি ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি বুঝতে পারেন, ওয়েবসাইটে পাত্রের প্রোফাইলে কেউ একজন নিজের ছবি ব্যবহার না করে ওই উপস্থাপকের ছবি ব্যবহার করেছেন।
এরপর তিনি প্রোফাইল ঘেঁটে ওই উপস্থাপকের ফোন নম্বর পান। পরে একটি মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে ওই টিভি উপস্থাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেই নারী। তখন জানতে পারেন, অন্য কোনো অচেনা ব্যক্তি ওই ওয়েবসাইটে পাত্রের প্রোফাইলে উপস্থাপকের ছবি দিয়েছেন। পাত্র-পাত্রীর ওয়েবসাইটে থাকা সেই অ্যাকাউন্ট আসলে ভুয়া। ওই টিভি উপস্থাপক তখন এ ব্যাপারে সাইবার অপরাধসংক্রান্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন।
এদিকে ওই নারী ব্যবসায়ী ক্রমাগত টিভি উপস্থাপককে মেসেজ দিয়ে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ওই উপস্থাপক নম্বরটি ব্লক করে দেন।
কিন্তু নারী নাছোড়বান্দা। তিনি ওই টিভি উপস্থাপককে বিয়ে করেই ছাড়বেন। একপর্যায়ে তিনি তাঁকে (উপস্থাপক) অপহরণের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি চার ব্যক্তিকে ভাড়া করেন। ওই উপস্থাপকের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে তাঁর গাড়িতে একটি ট্র্যাকিং ডিভাইসও লাগিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের ভাষ্য, ১১ ফেব্রুয়ারি চার ভাড়াটে অপহরণকারী ওই উপস্থাপককে অপহরণ করে সেই নারীর অফিসে নিয়ে যান। এরপর তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। জীবনশঙ্কায় পড়ে ওই উপস্থাপক তখন সেই নারীর প্রস্তাবে হ্যাঁ বলে দেন। এরপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে ওই উপস্থাপক উপ্পাল পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ করেন। ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের (আইপিসি) ২৬৩, ৩৪১, ৩৪২ এবং এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা করা হয়েছে।
তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত ওই নারীকে আটক করে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে সন্দেহভাজন চার ভাড়াটে অপহরণকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।