ভারতে সন্ত্রাসবাদ দমন আইনের অধীনে মনিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বমূলক চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে সোমবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মনিপুরে সহিংসতা চলাকালে এই সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে আদিবাসী সমাজকে আক্রমণ করেছে এই অভিযোগে এদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছিল কুকিসহ অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়। ভারতের প্রধান সন্ত্রাস দমন আইন ইউএপিএর (আনলফুল অ্যাকটিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট) অধীনে আজ সোমবার মেইতেই চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ), ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (ইউএনএলএফ), কাংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টি (কেসিপি), কাংলেই ইয়াওল কান্না লুপ (কেওয়াইকেএল), অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যালিস্ট ইউনিটি কাংলেইপাক (এএসইউকে), এর সমন্বয় কমিটি কাংলেই ইয়াওল কানবা লুপ (কেওয়াইকেএল), সমন্বয় কমিটি এবং অ্যালায়েন্স ফর সোশ্যালিস্ট ইউনিটি কাংলেইপাক (এএসইউকে) ও মনিপুর পিপলস আর্মি (এমপিএ)।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পেছনে একগুচ্ছ কারণ দেখানো হয়েছে। এ ছাড়াও, সরকার মনে করছে যে এই সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা না হলে তাদের প্রভাব বাড়তে থাকত। এ ছাড়া সদস্যের সংখ্যা বাড়তে থাকলে এর নেতিবাচক প্রভাব মনিপুরসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ওপরে পড়ত। এই সংগঠনের বেশ কয়েকটিকে অতীতেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এগুলো সার্বিকভাবে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং বিচারব্যবস্থার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেও মনে করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের চোখে এগুলো বিচ্ছিন্নতাবাদী, নাশকতামূলক, সন্ত্রাসী এবং সহিংস কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছিল।
মনিপুরে গত ছয় মাস ধরে জাতিগত সহিংসতা চলছে। সহিংসতায় ১৭৫ জনের ওপরে মানুষ মারা গেছেন। এই চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে এত দিন ধরে কেন ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি, সেই প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে কুকিসহ অন্যান্য আদিবাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত চরমপন্থী সংগঠনগুলোকে অতীতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে অভিযান চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু মেইতেই সংগঠনগুলো খোলাখুলি এত দিন কাজ করছিল যা এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করল কেন্দ্র সরকার।