ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে কলকাতা শহরে টানা কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হয়েছে। এতে শহরের অনেক সড়ক ও এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সড়ক খালে রূপ নিয়েছে। কিছু এলাকায় বাসিন্দাদের ছোট নৌকায় করে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে সর্বত্র একই চিত্র।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড় দানা আছড়ে পড়ে ওডিশার ধামরা মৎস্য বন্দর ও তৎসংলগ্ন ভেতর কণিকা দ্বীপ হয়ে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপে। সাগরদ্বীপে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দানা দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপরও দানার ডানা ঝাপটায় পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণি পর্যটনকেন্দ্রকে কাঁপিয়ে দিয়ে গেছে জলোচ্ছ্বাসের ছোবল। দানায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে জলোচ্ছ্বাসের কারণে প্লাবিত হয়েছে শস্যখেত। পূর্ব মেদিনীপুরের দু-এক জায়গায় দু-একটি ছোটখাটো গাছ ভেঙে গেলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
দানার প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড় ধরনের জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। কলকাতা পৌর করপোরেশন পানি সরানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় পাম্প চালু করেছে। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত কিছু সড়কে জলাবদ্ধতা ছিল। ফলে অনেক এলাকায় ছোট নৌকায় করে বাসিন্দারের চলাচল করতে দেখা গেছে।
সড়কের পাশাপাশি কলকাতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল ও এলাকাতেও পানি জমেছে। রক্ষা পায়নি কলকাতার পিজি হাসপাতাল থেকে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। কলেজ স্ট্রিট, রবীন্দ্রসরণি, শ্যামবাজার, বাগবাজার, হাতিবাগান, বউবাজার, শিয়ালদহ, মহাত্মা গান্ধী রোড, হেদুয়া, হাওড়া ময়দান, বিটি রোড, বেহালা, ভবানীপুর, পার্ক সার্কাস, উল্টোডাঙ্গা, সেন্ট্রাল এভিনিউ, বালিগঞ্জ, টালিগঞ্জ, গড়িয়াহাট, গড়িয়া, সোনারপুর, বেহালা, গলফগ্রিন, রডন স্ট্রিট থেকে দমদম, কৈখালী, নাগেরবাজার, লেক টাউন, বেলগাছিয়া ও এয়ারপোর্ট এলাকা।
অন্যদিকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর, শঙ্করপুর পর্যটনকেন্দ্রের রাস্তাঘাটও ডুবে গেছে। প্লাবিত হয়েছে ওই সব এলাকার শস্যখেত। আরও ডুবেছে বকখালি, সন্দেশখালি থেকে সুন্দরবন অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা, রাস্তাঘাট ও শস্যখেত। কিছু কিছু এলাকায় দু-একটি গাছ ভেঙে গেছে। তবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি নয়।
বৃষ্টির তাণ্ডব চলছে পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রাম, বাঁকুড়া, এগরা, খেজুরিসহ সুন্দরবনের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়। কিছু কাঁচা বাড়ি ভেঙে যাওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। তবে যেমনটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, তেমন আঘাত করেনি দানা।