শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যায় ভারতের সম্ভাব্য যোগসূত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে কানাডা।
গতকাল মঙ্গলবার কানাডা সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। সূত্রটির ভাষ্য, হরদীপ হত্যায় ভারতীয় এজেন্টদের সম্ভাব্য জড়িত থাকা-সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে।
হরদীপ কানাডায় বসবাসকারী শিখ নেতা ছিলেন। গত জুনে তিনি কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। ১৯৭৭ সালে ভারতের পাঞ্জাব থেকে কানাডায় গিয়েছিলেন হরদীপ।
পাঞ্জাবের শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তান প্রতিষ্ঠার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন হরদীপ। ভারতের অভিযোগ, হরদীপ সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন খালিস্তানি টাইগার ফোর্স ও ভারতে নিষিদ্ধ শিখস ফর জাস্টিসের কানাডা শাখার নেতা ছিলেন। ভারতের চোখে তিনি সন্ত্রাসী ও ফেরার ছিলেন। তাঁকে দেশে ফেরত আনতে আগ্রহী ছিল ভারত।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত সোমবার পার্লামেন্টে বলেছেন, ৪৫ বছর বয়সী হরদীপ হত্যায় ভারতীয় এজেন্টদের জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ তাঁর দেশের গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে। কানাডার মাটিতে একজন কানাডীয় নাগরিককে হত্যার সঙ্গে বিদেশি সরকারের জড়িত থাকার বিষয়টি তাঁর দেশের সার্বভৌমত্বের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘন।
ট্রুডোর এমন মন্তব্যের পর সোমবার কানাডায় ভারতের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) প্রধানকে বহিষ্কার করে অটোয়া।
ভারত দ্রুত ট্রুডোর বক্তব্যকে অযৌক্তিক বলে প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে অটোয়ার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ভারতে নিযুক্ত কানাডার এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় নয়াদিল্লি।
কানাডা সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রটি গতকাল বলেছে, সোমবার প্রকাশ্যে যে তথ্য অটোয়া প্রকাশ করেছে, সেটিসহ এই হত্যার বিষয়টি নিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
তথ্যগুলো স্পর্শকাতর হওয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কানাডার এই কর্মকর্তা (সূত্র) বলেন, অটোয়ার কাছে থাকা প্রমাণ যথাযথ সময়ে জানানো হবে।
গতকাল ট্রুডো সাংবাদিকদের বলেছেন, আন্তর্জাতিক আইনে এই মামলার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ঘটনাটি তদন্তে কানাডাকে পূর্ণ সহযোগিতার জন্যও তিনি নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানান।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা কানাডার তদন্তে সহায়তা করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, এ বিষয়ে কানাডার কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। তাঁরা অভিযোগ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন। তাঁরা মনে করেন, বিষয়টি নিয়ে পূর্ণ ও স্পষ্ট তদন্ত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তাঁরা ভারত সরকারকে এই তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করবেন।