গুজরাট দাঙ্গার প্রচার

সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদের জামিন

তিস্তা শেতলবাদ
ছবি : রয়টার্স

সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করলেন সুপ্রিম কোর্ট। গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারে জড়িত থাকার অভিযোগে আড়াই মাস আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের এজলাস দুদিন ধরে শুনানির পর শুক্রবার এই আদেশ দিয়ে বলেন, তিস্তা একজন নারী। দুই মাস ধরে তিনি জেলে রয়েছেন। টানা সাত দিন তিনি পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। ওই সময় প্রতিদিন তাঁকে জেরা করা হয়েছিল। এই আদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, তিস্তাকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। তদন্তের কাজে তাঁকে সহায়তাও করতে হবে।

২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সাক্ষ্য-প্রমাণ জাল করার অভিযোগে তিস্তাকে গুজরাট পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল গত ২৫ জুন। তার আগের দিনেই গুজরাটের গুলবার্গ সোসাইটি হত্যা মামলায় তৎকালীন রাজ্য সরকারকে (নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন) ক্লিন চিট দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট তিস্তাদের আনা মামলা খারিজ করে দেন। সেই রায়ে তিস্তার বিরুদ্ধে নথি জালসহ গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন বিচারপতি স্বয়ং। রায় দানের সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংবাদমাধ্যমের কাছে তিস্তা সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। পরদিনই গ্রেপ্তার করা হয় তিস্তাকে।

গত বৃহস্পতিবার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করে বলেছিলেন, এই মামলায় আদালতের কাছে এমন কোনো তথ্য দাখিল করা হয়নি, যা জামিন পাওয়ার অযোগ্য। এমন কোনো অপরাধের উল্লেখও নেই, যেখানে জামিন না দেওয়ার শর্ত রয়েছে। তা ছাড়া দুই মাস ধরে তিনি জেলে রয়েছেন, অথচ এখনো মামলার চার্জশিট জমা পড়েনি। হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের শুনানি হবে ছয় সপ্তাহ পর। এটাই কি গুজরাট হাইকোর্টের প্রথা? এ ধরনের কোনো মামলায় কোনো নারীকে এর আগে এত দিন ধরে জেলে রাখা হয়েছে কি না, সুপ্রিম কোর্ট তা গুজরাট সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন।

সমাজকর্মী তিস্তা শেতলবাদ গুজরাটের দাঙ্গাপীড়িতদের পাশে থেকেছেন শুরু থেকেই। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আইনি সহায়তা দিয়ে গেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করায় জাতিসংঘও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। বিজেপি তিস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ রাখেনি। বিজেপির সর্বভারতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র এই অভিযোগও করেছিলেন, তিস্তা গুজরাটের বিজেপি সরকারকে বিপাকে ফেলতে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেলের কাছে থেকে ৩০ লাখ রুপি নিয়েছিলেন। সেই টাকা তাঁকে দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশে।