জম্মু-কাশ্মীরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ
জম্মু-কাশ্মীরের নতুন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ

জম্মু-কাশ্মীর: ওমর আবদুল্লাহর শপথ, কংগ্রেস নেই মন্ত্রিসভায়

জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি) নেতা ওমর আবদুল্লাহ। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় শ্রীনগরে শের ই কাশ্মীর ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে তিনি ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করান উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা।

ওমর আবদুল্লাহ আগেও জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। কিন্তু তখন তা ছিল পূর্ণ রাজ্য। ২০১৯ সালে রাজ্যভাগ, কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়া ও সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজের ৫ বছর পর প্রথম নির্বাচনেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী হলেন। ওমর হলেন আবদুল্লাহ পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম, যিনি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেছেন। তাঁর দাদা শেখ আবদুল্লাহ ও বাবা ফারুক আবদুল্লাহ—দুজনই জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।

ওমর আবদুল্লাহর সঙ্গে শপথ নিয়েছেন আরও পাঁচ বিধায়ক। উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সুরেন্দ্র সিং চৌধুরী। জম্মুর নৌশেরা কেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হারান বিজেপির রাজ্য সভাপতি রবীন্দ্র রায়নাকে। ওমরের মন্ত্রিসভায় তিনি ছাড়াও জম্মুর প্রতিনিধিত্ব করছেন আরও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী সতীশ শর্মা। তাঁরা ওমরকে নিঃশর্ত সমর্থন জানিয়েছেন।

মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলেও কংগ্রেস এ সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন জানানোর চিঠি উপরাজ্যপালকে আগেই পাঠিয়ে দেয়। মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি সিপিএম ও আম আদমি পার্টিরও। দুই দলই একটি করে আসন জিতেছে। ওমর কংগ্রেসের একজনকে মন্ত্রী করতে রাজি ছিলেন। কংগ্রেস রাজি হয়নি।

সাকিনা ইটু মন্ত্রিসভার একমাত্র নারী সদস্য। অন্য দুই মন্ত্রী জাভেদ দার ও জাভেদ রানা। ৯০ সদস্যের বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বহর ৯ জনের বেশি হতে পারবে না। অর্থাৎ, ওমর ভবিষ্যতে আরও তিনজনকে মন্ত্রী করতে পারবেন।

এবারের ভোটে ছয়টি আসন পেলেও ওমরের মন্ত্রিসভায় কংগ্রেস যোগ দেয়নি। আজ সকালেই দলের শীর্ষ নেতারা এ সিদ্ধান্ত নেন। মন্ত্রিসভায় যোগ না দিলেও কংগ্রেস এ সরকারকে নিঃশর্ত সমর্থন জানানোর চিঠি উপরাজ্যপালকে আগেই পাঠিয়ে দেয়। মন্ত্রিসভায় স্থান হয়নি সিপিএম ও আম আদমি পার্টিরও। দুই দলই একটি করে আসন জিতেছে। ওমর কংগ্রেসের একজনকে মন্ত্রী করতে রাজি ছিলেন, কংগ্রেস রাজি হয়নি।

মন্ত্রিসভায় যোগ না দেওয়ার একটা কারণ অবশ্য কংগ্রেস জানিয়েছে। প্রদেশ সভাপতি তারিক হামিদ কাররা আজ এক বিবৃতিতে বলেন, কংগ্রেস বারবার পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরতের দাবি জানিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও বারবার সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আজও তা মানা হয়নি। বিজেপি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। সেই অসন্তোষের কারণেই প্রতিবাদস্বরূপ কংগ্রেস আপাতত মন্ত্রিসভায় যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের মর্যাদা ফেরতের দাবি কংগ্রেস সব সময় জোরালোভাবে জানিয়ে যাবে।

আজকের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে ওমর আবদুল্লাহ ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সব বড় শরিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কংগ্রেসের পক্ষে হাজির ছিলেন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও তারিক হামিদ কাররা। শ্রীনগরে উপস্থিত ছিলেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, ডিএমকের সাংসদ কানিমোজি, এনসিপির সুপ্রিয়া সুলে, সিপিআইয়ের ডি রাজা, সিপিএমের প্রকাশ কারাত, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংয়েরা। ইন্ডিয়া জোটের শরিক হয়েও যাঁর দলের সঙ্গে এনসি এবার আসন সমঝোতা করেনি, সেই পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিও অনুষ্ঠানে এসেছিলেন।

আজ হজরতবাল মসজিদে প্রার্থনার পর এএনআইকে ওমর আবদুল্লাহ বলেন, ‘জম্মু–কাশ্মীরের মানুষের সমস্যার সুরাহায় ভারত সরকারের সাহচর্যে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত। সার্থকভাবে সেই সেবার সেরা উপায় হলো, পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়া।’