তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে ভারতের তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা—সিবিআই। সংস্থাটি পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন সরকারি নিয়োগসংক্রান্ত মামলার তদন্ত করছে। সিবিআইয়ের পক্ষে তদন্তকারী অফিসার সঞ্জয়কুমার সামল একটি চিঠি দিয়ে অভিষেককে আগামীকাল শনিবার বেলা ১১টার মধ্যে সংস্থাটির মধ্য কলকাতার অফিসে যেতে বলেছেন। তাঁকে সেখানে জেরা করা হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে।
বর্তমানে অভিষেক বাঁকুড়া জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শনিবার তদন্তকারী সংস্থার দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার জন্য শুক্রবার রাতেই কলকাতায় ফিরছেন অভিষেক।
সিবিআইয়ের নোটিশ পাওয়ার কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিষেক লিখেছেন, ‘এক দিনের আগাম নোটিশ না দেওয়া সত্ত্বেও আমি সমন মেনে চলব। আমি তদন্তের সহযোগিতা করব। আমার গণযোগাযোগ যাত্রা চলবে এবং বাঁকুড়ায় এ জায়গা থেকেই ২২ মে আবার শুরু হবে।’
অভিষেক বলেন, ‘এ ঘটনায় হতাশ না হয়ে, আমি আরও বেশি উৎসাহ এবং প্রতিশ্রুতি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের সেবা করার চেষ্টা করব।’
তৃণমূল কংগ্রেসের এক সাবেক যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা। কুন্তলের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অভিযোগ, তিনি সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছেন। গত এপ্রিল মাসে সিবিআই আদালতে জানায়, নিয়োগবিষয়ক পরীক্ষায় যিনি যত কম নম্বর পেয়েছেন, তাঁর থেকে তত বেশি টাকা তুলেছেন কুন্তল। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তৃণমূল কংগ্রেস কুন্তলকে দল থেকে বহিষ্কার করে।
এরপর তিনি সিবিআই বিচারককে একটি চিঠি লিখে জানান, নিয়োগ মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করার জন্য সিবিআই তাঁর ওপরে চাপ সৃষ্টি করছে। কারাগার থেকে আদালতে যাওয়ার পথে তিনি এ অভিযোগ করেন প্রচারমাধ্যমে।
কুন্তল ঘোষের চিঠি–সংক্রান্ত মামলাতেই অভিষেককে তলব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকালই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছিলেন, কুন্তল ঘোষ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
এ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আজই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে আবেদন করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষ। যদিও জরুরি শুনানির আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
এরপর অভিষেককে আগামীকালই হাজিরা দিতে বলে চিঠি পাঠায় সিবিআই। আগামীকাল তিনি শুধু নিজের আইনজীবীকে নিয়ে সিবিআই দপ্তরে যান, নাকি বিরাটসংখ্যক পার্টির কর্মী এবং সমর্থকদের নিয়ে যান, এখন সেটাই দেখার বিষয়।