নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের শান্তিনিকেতনের বাড়ি প্রতীচীর ১৩ শতাংশ জায়গা ফাঁকা করার নোটিশ দিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। আগামী ৬ মের মধ্যে ওই জায়গা ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে জমি ফাঁকা করা না হলে আইনানুগভাবে অমর্ত্য সেনকে ওই জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে। বিশ্বভারতীর এ পদক্ষেপে নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু।
বিশ্বভারতীর এ নির্দেশের নিন্দা জানিয়েছেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও ভারত সরকারের সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। গত রাতে এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বভারতী অমর্ত্য সেনকে যেভাবে হয়রানি করছে এবং জমি ছাড়ার জন্য উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে, তা আজ ভারতের লজ্জা। অমর্ত্য সেন ভারতের নাগরিক এবং বিশ্বের আইকন। অমর্ত্য সেনের সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বিশ্বভারতী তাঁর বিরুদ্ধে নেমেছে।’
কৌশিক বসু আরও বলেন, ‘এ ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষেও লজ্জার। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন বিশ্বভারতী যেভাবে অমর্ত্য সেনকে জমি বিতর্কে নোটিশ পাঠিয়েছে, তাতে অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর আসল ছায়াই ফুটে উঠেছে। বিশ্বভারতীর শিক্ষক, শিক্ষার্থীরাও এখন এই একই অভিযোগ তুলেছেন।’
জমি দখলের অভিযোগ এনে দায়েরকৃত মামলায় ১৩ এপ্রিল চূড়ান্ত শুনানি হয়। ওই দিন অমর্ত্য সেন বা তাঁর আইনজীবী উপস্থিত না হওয়ায় ১৯ এপ্রিল রাতে অমর্ত্য সেনের বাসভবন প্রতীচীর সামনে জমি খালি করে দেওয়ার নোটিশ লাগিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নোটিশে বলা হয়েছে, ১৫ দিনের সময়সীমা অর্থাৎ ৬ মে পার হওয়ার পর অমর্ত্য সেনের দখলে থাকা ওই জমি আইনের মাধ্যমে উদ্ধার করা হবে। তবে অমর্ত্য সেন চাইলে এ আদেশের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন। এ সময় বিশ্বভারতী অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ করার কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে না।
অমর্ত্য সেন বিদেশে থাকায় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে না পারায় এর আগে তাঁর আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী শুনানিতে অংশ নিতে বিশ্বভারতীর কাছে তিন মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করেন।
যদিও অমর্ত্য সেন দাবি করেছেন, ওই জমি তাঁর বাবার আমলের। ১৯৪৩ সালে অমর্ত্য সেনের বাবা আশুতোষ সেনকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই জমি লিজ দিয়েছিল। সেই জমি এখন অমর্ত্য সেনের নামে বীরভূমের বোলপুরের ভূমি দপ্তর থেকে মিউটেশনও করা হয়েছে। সুতরাং অবৈধ দখলের প্রশ্ন নেই। অমর্ত্য সেনের এ জমির মোট পরিমাণ ১.৩৮ একর।