আগামী মঙ্গলবার ভারতের মণিপুর রাজ্যের বিধানসভার অধিবেশন বসছে। তবে এই অধিবেশনে যোগ দেবেন না বিধানসভার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ১০ এমএলএ। জেলার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় রাজধানী ইম্ফলে যেতে চাইছেন না তাঁরা। আজ শনিবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন কুকি-জো-হামার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এই এমএলএরা। তাঁদের মধ্যে বিজেপির দুজন মন্ত্রীও রয়েছেন।
রাজ্য সরকারের সুপারিশের ভিত্তিতে মণিপুরের রাজ্যপাল অনুসূইয়া উইকে আগামী মঙ্গলবার বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণত বর্ষাকালীন অধিবেশন দুই সপ্তাহ ধরে হয়। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি বিবেচনায় এক দিনের জন্য বসতে যাচ্ছে এই অধিবেশন। ৬০ সদস্যের বিধানসভায় ১০ জন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর এমএলএ অনুপস্থিত থাকায় অধিবেশনের মর্যাদা অনেকটা কমে গেল।
গত মে মাস থেকে মণিপুরে কুকি–মেইতেইদের মধ্যে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ। সহিংসতা শুরুর পরে ২৯ আগস্টেই বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসছে।
মণিপুরের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে নিয়ে গঠিত ফোরামের (আইটিএলএফ) নেতা গিঞ্জা ভুয়ালজং বলেছেন, শুধু কুকি-জো-হামার বিধায়কেরাই নন, সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মেইতেই-অধ্যুষিত ইম্ফলে যেতে ভয় পাচ্ছেন। ‘কুকি, জোমি এবং অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মন্ত্রী, বিধায়ক এবং নেতারা কেউই নিরাপত্তার কারণে ইম্ফল সফরে যেতে রাজি নন,’ বলেন ভুয়ালজং।
গতকাল শুক্রবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের কঠোর সমালোচনা করেছেন কুকি-জোমি-হামার বিধায়কেরা। তাঁরা বলেছেন, ৩ মে রাজ্যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের কোনো যোগাযোগ নেই।
কুকি-জো-হামার বিধায়কদের এমন দাবি অস্বীকার করেছেন বীরেন সিং। তিনি বলেছেন, রাজ্যের আদিবাসী বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিধানসভার আসন্ন বর্ষাকালীন অধিবেশনে আসার জন্য তাঁদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই আলাপের কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন এমএলএরা। এই এমএলএদের মধ্যে বীরেন সিংয়ের সরকারের দুজন মন্ত্রীও আছেন। তাঁরা হলেন লেটপাও হাওকিপ এবং নেমচা কিপগেন। তাঁরাও এখন পুরোপুরি বিজেপিশাসিত সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।