ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে ১৭ দিন পর আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন কলকাতার আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। কলকাতায় আর জি কর হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় তদন্ত ও বিচারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করছিলেন তাঁরা।
অনশন কর্মসূচির পাশাপাশি আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা পূর্বঘোষিত স্বাস্থ্য ধর্মঘট কর্মসূচিও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে এ কর্মসূচি পালন করার কথা ছিল। তবে আগামী দিনগুলোয় কর্মসূচি কেমন হবে, সেসব জানাতে আগামী শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহাসমাবেশ করবেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
গতকাল রাতে রাজ্য সচিবালয় নবান্নের সভাকক্ষে ১০ দফা দাবি আদায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। বৈঠক শেষে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চে ফিরে এসে তাঁরা কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের অপসারণের বিষয় মেনে নেননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, স্বাস্থ্যসচিবের দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত নয়। তিনি অভিযুক্তও নন। যদিও স্বাস্থ্যসচিবের দুর্নীতির বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকেরা মমতার কাছে তথ্য–প্রমাণ জমা দিয়েছেন।
মতের অমিল দেখা গেছে রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজে টাস্কফোর্স নিয়োগসংক্রান্ত দাবি নিয়েও। তবে মমতা এদিন চিকিৎসকদের ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, আর জি কর হাসপাতালের ভুক্তভোগী ৪৭ জন চিকিৎসক ও কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ বা তদন্ত কমিটির কর্মকর্তাদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকেরা রাজ্য সরকারকে আদৌ কিছুই জানাননি।
অনশন প্রত্যাহারের বিষয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের নেতা রুমেলিকা কুমার বলেন, ‘সরকারি অনুরোধে নয়, কাকু-কাকিমা (নির্যাতিতা নারী চিকিৎসকের বাবা–মা) ও সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিলাম।’
আরেক চিকিৎসক নেতা দেবাশীষ হালদার বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অনশন প্রত্যাহার করলাম। আগামী শনিবার আর জি কর হাসপাতালে মহাসমাবেশ করব।’
পশ্চিমবঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হয় ৫ অক্টোবর। সব মিলিয়ে ১৪ জন চিকিৎসক অনশনে বসেন। অসুস্থ হলে ছয়জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকি আটজন গতকাল রাত পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে গেছেন কলকাতা ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।