বিচিত্র

একের পর এক বিয়ে করতেন, অর্থ, গয়না, নিয়ে গায়েব হতেন এই নারী

বিয়ে
প্রতীকী ছবি

কখনো শিবাঙ্গী সিসোদিয়া, কখনো পিঙ্কি গৌতম, আবার কখনো সবিতা শাস্ত্রী তিনি। একেক জায়গায় একেক নামে এই নারী বিভিন্ন পেশার পুরুষদের বিয়ের জন্য বেছে নিতেন। এরপর বরের নগদ টাকা, গয়না এবং অন্যান্য মূল্যবান জিনিস হাতিয়ে নিয়ে কিছুদিনের মধ্যে গায়েব হয়ে যেতেন।

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের কানপুরে পুলিশ এমন এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই নারী কাউকে বিয়ের পর নিজেকে কর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেন। সর্বশেষ ওই নারী জিতেন্দ্র গৌতম নামে পুলিশের এক সদস্যকে বিয়ে করেন। তিনিও এই নারীর প্রতারণার শিকার হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। ওই ‘বধূ’ তাঁর কাছ থেকে ১০ লাখ রুপি নিয়ে পালিয়ে যান।

জিতেন্দ্র ঝাঁসির বাসিন্দা। তবে এখন তিনি কাজ করছেন কানপুরের ফজলগঞ্জ থানায়। ২০১৬ সালে ঝাঁসির খুশিপুরায় শিবাঙ্গীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। একপর্যায়ে তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

বিয়ের আগেও ওই নারী গাড়ি (এসইউভি) কিনতে জিতেন্দ্রর কাছ থেকে ৬ লাখ ২১ হাজার রুপি নেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কনস্টেবল গাড়িটি পাননি, তাঁর দেওয়া অর্থও ফেরত পাননি।

নাজিরাবাদ পুলিশের পরিদর্শক কৌশলেন্দ্র প্রতাপ সিং বলেন, ‘যখনই জিতেন্দ্র এসইউভি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন, তখনই ওই নারী তাঁকে বলতেন, গাড়ির নম্বর এখনো পাননি। তিনি নম্বরের অপেক্ষায় আছেন, শিগগিরই আসবে।’

পুলিশের সদস্য জিতেন্দ্র তদন্ত কর্মকর্তাদের আরও বলেন, ওই নারী তাঁর আত্মীয় বলে যাঁদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাও ভুয়া। তাঁদের ভাড়ায় আনা হয়েছিল।

পুলিশের পরিদর্শক কৌশলেন্দ্র বলেন, পুলিশের ওই সদস্য কাজ শেষে বাসায় ফিরে তাঁর স্ত্রীকে অন্য এক পুরুষের সঙ্গে দেখতে পান। তখনই ওই নারীর সত্যিকার চেহারা বেরিয়ে আসে।

কৌশলেন্দ্র বলেন, ‘ওই কনস্টেবল তাঁর স্ত্রীর কাছে ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। কিন্তু সন্তোষজনক জবাব না পেয়ে তিনি তাঁর ওপর চোখ রাখতে শুরু করেন। পরে তিনি দেখতে পান, ওই ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীর প্রেমিক। তাঁর বাড়ি ঝাঁসির মাওরানিপুরে। তিনি আরও জানতে পারেন, শিবাঙ্গী ঝাঁসির আরেক ব্যক্তি ব্রিজেন্দ্রকে বিয়ে করেছেন। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। এই সন্তানেরা মায়ের সঙ্গে ঝাঁসিতে থাকে।’

পুলিশ জানায়, ওই নারী জিতেন্দ্রকে বলেন, তিনি চণ্ডীগড়ে বদলি হয়ে গেছেন। এখন সেখানেই থাকবেন। পুলিশ এ ঘটনায় শিবাঙ্গীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং এই কেলেঙ্কারিতে অন্যদের ভূমিকা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পরিদর্শক কৌশলেন্দ্র বলেন, পুলিশ সদস্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিবাঙ্গীর বিরুদ্ধে আইপিসির বিভিন্ন ধারায় চাঁদাবাজি, বিশ্বাস ভঙ্গ, জালিয়াতি এবং বিবাহিত হওয়ার পরও আবার বিয়ে করার অপরাধে মামলা হয়েছে।