ভারতের মণিপুর রাজ্যে আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজ্যের চুড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর জেলার সীমানায় এ সংঘর্ষে আরও দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন।
গতকাল মণিপুরের খৈরেন্টক নামে একটি এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে হতাহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটে। বিবদমান পক্ষের লোকজনের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলিও হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল মণিপুর বিধানসভার অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ভোর ছয়টা নাগাদ গোলাগুলি শুরু হয়। দিনভর গোলাগুলির পর রাত পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে।
সংঘর্ষে নিহত দুই ব্যক্তির একজন জংমিনলুন গাংটে (৩০)। তিনি একজন গ্রামরক্ষী। আদিবাসী ট্রাইবাল লিডারস ফোরাম (আইটিএলএফ) বলছে, খৈরেন্টকের আশপাশের কুকি-জো গ্রামগুলোতে মঙ্গলবার হামলা করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে বেলা ১১টা নাগাদ জংমিনলুন গাংটে নিহত হন।
তবে স্থানীয় পুলিশের দাবি, সংঘর্ষে নিহত গ্যাংটের কাছ থেকে একটি দেশীয় বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে বিস্ফোরণে গ্যাংটের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
স্থানীয় এক সাংবাদিক প্রথম আলোকে জানান, গোলাগুলি শুরুর পর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান শুরু করে। হামলায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এদিকে গতকালের সংঘর্ষে নিহত অপর ব্যক্তি হলেন লাইবুজাম ইনাও। তিনি বিষ্ণুপুর জেলার বাসিন্দা। এ ছাড়া সংঘর্ষে সালাম জোতিন সিং নামের আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কাঁধে গুলি লাগলে তাঁকে দ্রুতই হাসপাতালে নেওয়া হয়। জানা গেছে, বর্তমানে ওই ব্যক্তির অবস্থা স্থিতিশীল।
মণিপুরের চুড়াচাঁদপুর ও বিষ্ণুপুর জেলার সীমানায় গত ৩ মে থেকে জাতিগত সংঘাত চলছে। এরপর ওই অঞ্চলে একাধিকবার সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতা কখনো একেবারে থামেনি। প্রতিবেশী এই দুই জেলার সীমানায় ধারাবাহিক সহিংসতা চলেছে। চুড়াচাঁদপুরে কুকি-জো সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ও প্রভাবশালী।এদিকে পাশের জেলা বিষ্ণুপুরে মেইতেইরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।
এই সহিংসতায় গত প্রায় চার মাসে দেড় শতাধিক প্রাণহানি হয়েছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। এসব মানুষ অস্থায়ী ত্রাণশিবিরগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। সেখানেও যে নিরাপদে আছেন, তা বলা যায় না। রাজ্যজুড়ে এক ত্রাসের পরিস্থিতি অব্যাহত আছে।