সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভায় এক–তৃতীয়াংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষণ করার বিধান রেখে এক ঐতিহাসিক বিল পাস করেছে ভারতের সংসদ। রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যেই এই বিল পাস হলো। ভারতের রাজনীতিতে পুরুষের চেয়ে নারীদের অংশগ্রহণ অনেক কম। দীর্ঘদিন ধরেই এই বৈষম্য চলে আসছিল। গতকাল বুধবার এই বিল পাস হয়।
ভারতের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। কিন্তু সংসদে মাত্র ১৫ শতাংশ এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ আসনে নারী আইনপ্রণেতা আছেন। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু নারী আইনপ্রণেতাদের অংশগ্রহণের নিরিখে দেশটি অনেক পিছিয়ে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মঙ্গলবার ভারতের সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই বিল উত্থাপন করেন। বিলটির পোশাকি নাম, ‘নারী শক্তি বন্দন অধিনিয়ম’। বিল উত্থাপন করে মোদি সব বিরোধী দলের কাছে এর সপক্ষে সমর্থন চান।
৪৫০ জনের বেশি সংসদ সদস্য বিলের পক্ষে ভোট দেন। দুজন বিরুদ্ধে ভোট দেন। সংসদে ছিলেন না ৮০ জন সংসদ সদস্য। এখন সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় এই বিল অনুমোদন দরকার হবে।
সংসদে নারীদের আসন সংরক্ষণের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে এসেছেন ভারতের লোকসভার সাবেক সদস্য নাজমা হেপতুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে সমানাধিকার পেতে দীর্ঘদিনের অভিযাত্রা ছিল। আজ শেষ পর্যন্ত তা পাওয়া গেল। আজ এক ইতিহাস সৃষ্টি হলো।’
বিলে সংশোধন চেয়ে এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন দুই সংসদ সদস্য। তাঁরা হলেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই- ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’(এআইএমআইএম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এবং তাঁর দলেরই সংসদ সদস্য ইমতিয়াজ জলিল। বিপুল গরিষ্ঠতায় বিল পাসের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লোকসভার সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
বিলটি ভারতের পার্লামেন্টে প্রথম তোলা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। তবে হিন্দি বলয়ের অনেক রাজ্যের বিরোধিতায় তা এত দিন পাস করা যায়নি।