খালিস্তান আন্দোলনের নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনের হুমকির পর গুজরাট পুলিশ নিরাপত্তাব্যবস্থা আরও জোরদার করার দিকে নজর দিয়েছে। এক দিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসরে যাতে কোনো রকম বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পান্নুনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আহমেদাবাদ পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সাইবার ক্রাইম) অজিত রাজিয়ান সংবাদমাধ্যম এনআইএকে বলেন, অডিও বার্তা দিয়ে সহিংসতায় উসকানি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসবের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। বেআইনি কাজকর্ম রোধ আইন অনুযায়ী (ইউপিএ) পান্নুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গুরপতবন্ত সিং পান্নুন কানাডায় থাকেন। তিনি ‘শিখস ফর জাস্টিস’ (এসএফজে) সংগঠনের নেতা। তাঁর এই সংগঠন ভারতে নিষিদ্ধ। পান্নুনও ভারতের চোখে সন্ত্রাসী। আরেক খালিস্তান নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের বদলা নিতে পান্নুন ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর বানচাল করার হুমকি দিয়েছেন। এক অডিও বার্তায় ওই হুমকি দিয়ে তিনি বলেছেন, গুজরাটের আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী আসর তাঁরা বানচাল করবেন। অডিও বার্তায় তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ‘৫ অক্টোবর থেকে এক দিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হবে না, শুরু হবে বিশ্ব সন্ত্রাসবাদ কাপ।’
গুজরাট পুলিশ জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের একটি নম্বর থেকে বহু ভারতীয়র ফোনে ওই হুমকি বার্তা এসেছে। সেই বার্তায় গত ২৮ জুন হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার উল্লেখ করে বদলা নেওয়ার কথা বলা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম উল্লেখ করে বার্তায় বলা হয়, তিনি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টির ট্রুডোকে অপমান করেছেন। তার বদলা নেওয়া হবে। গত বুধবার ‘এক্স’ হ্যান্ডল মারফত প্রচারিত পান্নুনের ওই বার্তা ভাইরাল হয়ে যায়।
হরদীপ হত্যার পেছনে ভারতের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ এনেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। তাঁরা ওই–সংক্রান্ত তথ্য পঞ্চদেশীয় জোট ‘ফাইভ আইজ’ মারফত পেয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন। পরে জানাজানি হয়, হরদীপ হত্যাসংক্রান্ত তথ্য কানাডাকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই অভিযোগের পর থেকে ভারত–কানাডা সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ হয়েছে।
ভারত যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কানাডা তদন্তে সহযোগিতা করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। ভারত পাল্টা জানিয়েছে, তাদের যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ দেওয়া হোক। এই পরিস্থিতিতে সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
এর আগে পান্নুন এক বার্তায় কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয় হিন্দুদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। ওই বার্তার পর ভারতের পাঞ্জাবের বিভিন্ন জেলায় পান্নুন ও তাঁর পরিবারের স্থাবর সম্পত্তি এনআইএ বাজেয়াপ্ত করে।