কলকাতার ঐতিহ্যবাহী আন্তর্জাতিক বইমেলার উদ্বোধন হলো। আজ সোমবার বেলা দুইটায় কলকাতার সল্টলেকের করুণাময়ীর সেন্ট্রাল পার্কে ‘বইমেলা প্রাঙ্গণে’ এর উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বইমেলার আয়োজক সংস্থা হলো কলকাতার পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড।
আজ দুপুরে এই মেলার উদ্বোধন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বইমেলা পারে গোটা বিশ্বে এক মিলনক্ষেত্র তৈরি করতে। তাই তো আজ হাজারও মানুষ সমবেত হয়েছে এই বইমেলায়।
মমতা বলেন, দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো এবার বইমেলায়। বইমেলার আয়োজক সংস্থা পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড এবার তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বইমেলায় পেয়েছে স্থায়ী এক বইমেলা প্রাঙ্গণ; স্থায়ী ঠিকানা। মমতা এ কথাও বলেন, নেতিবাচকতা একটা চিন্তাধারা হয়ে গেছে। নেতিবাচক কথাবার্তা সরিয়ে রেখে আমাদের শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্বের জন্য লড়াই করা উচিত। তাই এখন আমাদের গণতন্ত্র রক্ষায় সরব হতে হবে।
এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতার লেখা ছয়টি বই বের হচ্ছে। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দাঁড়াল ১২৮টি।
বইমেলা চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন এই মেলা শুরু হবে দুপুর ১২টায়। শেষ হবে রাত আটটায়।
বইমেলার এবারের ‘থিম কান্ট্রি’ স্পেন।
আজকে কলকাতার এই ৪৬তম বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্পেনের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মহানির্দেশক মারিয়া খোসে গালবেজ সালভাদর এবং কলকাতার প্রখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। আরও ছিলেন ভারতে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত হোসে মারিয়া বিদাও ডমিনিকা। ছিলেন আয়োজক সংস্থা পাবলিসার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে এবং সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়সহ কলকাতার বিশিষ্টজনেরা।
এবারের বইমেলায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, কিউবা, অস্ট্রেলিয়া, ইরান, থাইল্যান্ডসহ ২০ দেশের প্রকাশকেরা অংশ নিচ্ছেন। থাইল্যান্ড এবার প্রথম এসেছে কলকাতা বইমেলায়।
বড়–ছোট মিলিয়ে এবার বইয়ের স্টল হচ্ছে ৯৫০টি। বইমেলায় তোরণ হচ্ছে ৯টি। এর মধ্যে একটি হবে অগ্নিবীণা নামে। আবার স্পেনের তোলেদো গেটের আদলেও করা হবে অন্য একটি তোরণ। আরও হচ্ছে বিশ্ববাংলা তোরণ। দুটি অডিটরিয়াম হচ্ছে মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং প্যারিচাঁদ সরকারের নামে। দুটি মুক্তমঞ্চ থাকছে প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন এবং তরুণ মজুমদারের নামে। এই বইমেলায় ডিজিটাল পার্টনার করা হয়েছে সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়কে।
কলকাতা বইমেলায় যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ ৪৩টি প্রকাশনা সংস্থা।
বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন তৈরি হয়েছে ঢাকার বঙ্গভবনের আদলে সাড়ে তিন হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে।
এবার এই বইমেলায় বাংলাদেশ দিবস পালিত হবে ৪ ফেব্রুয়ারি। সেদিন উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা।