ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য মহুয়া মৈত্রের সদস্যপদ খারিজ মামলায় লোকসভা সচিবালয়কে নোটিশ পাঠালেন সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার ওই নোটিশে বলা হয়েছে, তিন সপ্তাহের মধ্যে লোকসভার সচিবালয়কে বহিষ্কারসংক্রান্ত বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।
লোকসভায় ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন করার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর মহুয়ার সদস্যপদ খারিজ করা হয়। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মহুয়া সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন।
লোকসভার সচিবালয়ের পক্ষে আজ বুধবার শুনানির সময় হাজির ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। বিচারপতি সঞ্জিব খান্না ও বিচারপতি দীপংকর দত্তর এজলাসে তিনি বলেন, সংসদের অভ্যন্তরে গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত বিবেচনার অধিকার সুপ্রিম কোর্টের নেই। তাই এই মামলা খারিজ করা দরকার।
মামলা খারিজ না করে বিচারপতিরা বলেন, এই মামলা শোনার অধিকার তাঁদের আছে কি না, সেটা আগে বিবেচনা করে দেখতে হবে। তারপর সিদ্ধান্ত।
তিন সপ্তাহের মধ্যে লোকসভার সচিবালয় জবাব পাঠালে প্রত্যুত্তরের জন্য মহুয়াকে আরও তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে। সেই হিসাবে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১১ মার্চ।
আজ বুধবার এই শুনানির নির্যাস মহুয়া নিজেই ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে জানান।
মহুয়ার আরজি ছিল দ্রুত মামলাটি শোনার। কারণ, ফেব্রুয়ারির শেষে সংসদের বাজেট অধিবেশন। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তাতে আমল দেননি। মহুয়ার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি অনুরোধ করেছিলেন, অন্তর্বর্তী নির্দেশ হিসেবে মহুয়াকে বাজেট অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।
তবে আইনজীবীর সেই আবেদন নাকচ করে বিচারপতি সঞ্জিব খান্না বলেন, ‘সেটা করা যায় না। সেটা হবে আবেদন গ্রহণ করারই শামিল। আমরা নিজেরাই এখনো নিশ্চিত নই, আমাদের এখতিয়ার কতখানি।’
মহুয়া মৈত্র তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মহুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ, তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা ও অন্যান্য দামি উপহারের বিনিময়ে তাঁরই স্বার্থে সংসদে প্রশ্ন করেছেন। এমনকি সেই ব্যবসায়ীর কাছে তিনি তাঁর ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ডও দিয়ে রেখেছিলেন, যাতে বিদেশে বসেও লোকসভায় প্রশ্ন ওঠানো যায়।
মহুয়া ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বারবার প্রশ্ন করায় তাঁকে এভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে ই-মেইলের লগইন পাসওয়ার্ড দেওয়ার কথা স্বীকার করে লোকসভার এথিক্স কমিটিকে মহুয়া বলেছিলেন, অধিকাংশ সংসদ সদস্যই তাঁদের পাসওয়ার্ড সচিব বা অন্যদের দিয়ে থাকেন। সেটাই ছিল এত দিনকার রীতি। কারণ, পাসওয়ার্ড অন্য কাউকে দেওয়া যাবে না, সেই নিয়ম তখনো ছিল না।