ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা

কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত টানাপোড়েন

ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তারের পর থেকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যের আপত্তি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র তাতে থেমে থাকেনি। ভারতের আপত্তি অগ্রাহ্য করে যুক্তরাষ্ট্র আবার কেজরিওয়াল প্রসঙ্গে কথা বলেছে। শুধু তা-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক হিসাব ‘জব্দ’ করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার ও বিচার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মন্তব্য করেছে জার্মানি।

ভারত দুই দেশের ক্ষেত্রেই আপত্তি জানায়। দুই দেশের কূটনীতিকদের তলব করে জানিয়ে দেয়, ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য অনভিপ্রেত। কূটনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। এই প্রবণতা বন্ধ না হলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। এ জন্য তারা গত বুধবার তলব করে দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্থায়ী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি জারি করে ওই মন্তব্য সম্পর্কে দেশের কড়া মনোভাব ও আপত্তির কথা জানানো হয়। জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র—দুই দেশই কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তার ও বিচারের প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয়ী। তাদের মন্তব্যে সেটাই ধরা পড়েছিল। দুই দেশই বলেছিল, তারা চায় বিচার সুষ্ঠুভাবে দ্রুত হোক। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো যেন অটুট থাকে।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত কঠোর মনোভাবের কথা জানিয়ে দেয়। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা পর সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হন। গ্লোরিয়া বারবেনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের ৪০ মিনিট ধরে কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থানে একই রকম আছি। আইনি প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছ হয়, ন্যায্য হয় এবং দ্রুত শেষ হয়, সেদিকে আমাদের নজর থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার ও তাঁর বিচারের ওপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকছে।’

ভারতের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে মিলার ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বিষয়টিও তোলেন। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের বেশ কিছু ব্যাংক হিসাব সে দেশের সরকার জব্দ (ফ্রিজ) করেছে। তারা বলেছে, এ কারণে নির্বাচনী প্রচার চালাতে তাদের অসুবিধা হবে। আমরা চাই প্রতিটি বিষয়ের বিচারই যেন সুষ্ঠুভাবে দ্রুত ও ন্যায্য হয়। আশা করি, এতে কারও আপত্তি থাকবে না।’

জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের এই মনোভাব আম আদমি পার্টি হাতিয়ার করেছে। কেজরিওয়ালই আবগারি (মদ) কেলেঙ্কারির নাটের গুরু—এ অভিযোগে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করে।

আরও চার দিনের ইডি হেফাজতে

এদিকে বার্তা সংস্থা এএনআই জানায়, আজ বৃহস্পতিবার কেজরিওয়ালকে আরও চার দিনের ইডি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির একটি আদালত। এর আগে তাঁকে ছয় দিন ইডি হেফাজতে থাকতে বলা হয়েছিল। তার মেয়াদ শেষ হয় আজ। আজ দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের কেজরিওয়াল বলেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আসলে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’।