উত্তর ভারতের বিজেপিশাসিত রাজ্য উত্তরাখন্ডে চলতি মাসেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (ইউসিসি) আইন চালু হতে চলেছে। প্রস্তাবিত ওই আইনের খসড়া শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির কাছে পেশ করা হয়।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি সম্পর্কিত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে রাজ্য সরকার একটি কমিটি তৈরি করেছিল। কমিটির সেই প্রতিবেদন ও আইনের খসড়া মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে চলতি মাসেই তা আইনে রূপান্তরিত হবে।
উত্তরাখন্ড হবে দেশের প্রথম রাজ্য, যেখানে রাজ্যস্তরে ওই আইন প্রণীত হবে। সে জন্য রাজ্য বিধানসভার এক বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। চার দিনের সেই বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। চলবে ৮ তারিখ পর্যন্ত।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধির অর্থ বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পত্তি ও জমিজমার অধিকার, উত্তরাধিকার, সন্তান দত্তক গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে সব জাত, ধর্ম, বর্ণের মানুষের জন্য এক আইন প্রযোজ্য হবে। ফৌজদারি আওতায় পড়ে না, এমন সব বিষয়ে জাত-ধর্মের কোনো ভেদাভেদ না রাখা।
ইউসিসি চূড়ান্ত সম্পর্কিত কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই। গত বছর ২২ মে ওই কমিটি গঠিত হয়েছিল। আজ শুক্রবার সাবেক বিচারপতি ওই প্রতিবেদন পেশ করবেন বলে রাজধানী দেরাদুনে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন এলাকায় বিপুল পুলিশি বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে।
আগামীকাল শনিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে এই প্রতিবেদন আলোচনার পর অনুমোদন পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়া আইন অনুমোদন পেলে তা ৬ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় পেশ করা হবে। রাজ্য সরকারের চেষ্টা ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই তা পাস করিয়ে আইনে রূপান্তর করা।
ভারতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শেষ হবে ৯ ফেব্রুয়ারি। তারপরই লোকসভা ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ভোটের প্রচারে উত্তরাখন্ডের ইউসিসি আইন বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের হাতিয়ার হয়ে উঠবে।
মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি আজ শুক্রবার বিষয়টির উল্লেখ করে ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে বলেছেন, রাজ্যের মানুষের কাছে এটা এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। ইউসিসি এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ (আরএসএস) ও বিজেপির তিনটি লক্ষ্যের অন৵তম অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়ন। বাকি দুটির একটি ছিল ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করা, যাতে জম্মু-কাশ্মীরের জন্য বিশেষ অধিকার নির্দিষ্ট করা ছিল এবং অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি। আগামী বছর আরএসএসের এক শ বছর। তার মধ্যেই তিন প্রতিশ্রুতি পালনে নরেন্দ্র মোদি সরকার সচেষ্ট।