ভারতের আসাম রাজ্যে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার তাফুজুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, তাফুজুল পালাতে গিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিলে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে পুলিশ হেফাজতে কীভাবে আসামির প্রকাশ্যে মৃত্যু হতে পারে, তা নিয়ে আজ শনিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আসাম।
ওই কিশোরী আসামের নগাঁও জেলার স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ে। ঘটনার সময় সে কোচিং থেকে ফিরছিল। বর্তমানে সে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পেতে আরেকটু সময় লাগবে।
তাফুজুলের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের ভাষ্য, যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, সেখানে ভোররাত চারটায় তাফুজুল ইসলামকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সে সময় তিনি পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন।
পুলিশের ভাষ্য, অভিযুক্ত তাফুজুল পুকুরে ঝাঁপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশি শুরু হয়। পরে যতক্ষণে তাঁর দেহ পাওয়া গেছে, ততক্ষণে তাফুজুল মারা গেছেন।
আসাম পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রচারমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এক পুলিশ কনস্টেবলের হাত থেকে হাতকড়া ছিনিয়ে নিয়ে তাফুজুল পালানোর চেষ্টা করেন এবং পুকুরে ঝাঁপ দেন। তাঁর মৃত্যুর কারণে তদন্তকাজ ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, তাঁর সহায়তায় অন্তত দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিল পুলিশ।
পুলিশের বক্তব্য অনুসারে, তাফুজুলকে নিয়ে আজই আরেক অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে পুলিশের যাওয়ার কথা ছিল।
গত বৃহস্পতিবার ওই ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর গতকাল শুক্রবার নগাঁওসহ আসামের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেন সাধারণ মানুষ। নগাঁওয়ে দোকান, বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বাড়তি পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেদিকে কড়া নজর রাখছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরকার।
এই ঘটনাকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বলে চিহ্নিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিষয়টি সামগ্রিকভাবে আমাদের সবার বিবেকে আঘাত করেছে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আমরা কাউকে রেহাই দেব না এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। আমি আসাম পুলিশের প্রধানকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’ তবে ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত কীভাবে হঠাৎই মারা গেলেন, সে সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।