ভারতের মণিপুর রাজ্যে সেনাবাহিনীর একজন ঠিকাদারকে ২৪ ঘণ্টা ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় মণিপুরের পশ্চিম ইম্ফল জেলায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। কারণ, লাইসরাম কমল বাবু নামের ৫৬ বছরের ওই ব্যবস্থাপক ইম্ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়ের সদস্য। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫৭ মাউন্টেন ডিভিশনের একটি শিবিরে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছিলেন।
লাইসরামের পরিবার জানিয়েছে, ৪৮ ঘণ্টা ধরে তাঁর ফোন বন্ধ। তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
লেইমাখং নামে যে জায়গায় সেনাবাহিনীর শিবির রয়েছে, সেটি মধ্য ও দক্ষিণ মণিপুরের মধ্যবর্তী দুই জেলার মধ্যে অবস্থিত। লাইসরাম এখানেই কাজ করতেন। এর একটি জেলা পশ্চিম ইম্ফল, যেটি মেইতেই–অধ্যুষিত। অন্যটি কুকি–অধ্যুষিত কংপোকপি। সুতরাং তিনি কুকিদের হাতে বন্দী হয়েছেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা মনে করছেন।
সে কারণেই এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এবং নতুন করে ইম্ফল পশ্চিমের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারের পর আজ বুধবারও বিক্ষোভ চলছে।
সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী লাইসরামকে খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যেই যৌথ অভিযান শুরু করেছে।গত সোমবার দুপুরে তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
মণিপুর রাজ্যে পুরো অক্টোবর ও আংশিকভাবে নভেম্বরে সহিংসতায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে সেখানে সহিংসতা শুরু হয়েছে। এখন রাজ্যের অধিকাংশ এমএলএ এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংকেই দায়ী করছেন।
তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনো বীরেনের ওপর আস্থা রাখছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখনো মণিপুর সফর করেননি। গত মে মাস থেকে চলা জাতিগত সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত আড়াই শ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে কর্মরত এক ঠিকাদারের নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে সেনাবাহিনীর অন্তত দুই হাজার সদস্যকে মাঠে নামানো হয়েছে। লাইসরামকে খুঁজে বের করতে এই সেনাসদস্যরা কাজ করছেন।