খননের সময় বিকট শব্দ হওয়ায় শুক্রবার রাতে উদ্ধারকাজ বন্ধ করা হয়।
খননের সময় বিকট শব্দ হওয়ায় শুক্রবার রাতে উদ্ধারকাজ বন্ধ করা হয়।

ভারতে টানেলে আটকা ৪১ জনকে উদ্ধার নিয়ে শঙ্কা

ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যে নির্মাণাধীন একটি সুড়ঙ্গের (টানেল) একাংশ ধসে আটকা পড়া ৪১ শ্রমিককে এক সপ্তাহ পরও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আজ শনিবার উদ্ধারকর্মীরা জানান, উদ্ধারকাজ চলার সময় গতকাল শুক্রবার সেখানে একটি বিকট শব্দ হলে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপরই উদ্ধার কাজ স্থগিত করেন তাঁরা। এতে আটকা পড়া শ্রমিকদের জীবিত উদ্ধার করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার ভোররাতে উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মখাল-যমুনাত্রী জাতীয় মহাসড়কে নির্মাণাধীন টানেলের একটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর রোববার সকাল থেকে সেখানে উদ্ধারকাজ শুরু হয়। গত বুধবার দিল্লি থেকে একটি বিশালকায় খননযন্ত্র এনে উদ্ধারকাজে যুক্ত করা হয়েছিল।

টানেল ধসে আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার লক্ষ্যে যেখানে ধসের ঘটনা ঘটেছে, তার পাশ দিয়ে নতুন করে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। শ্রমিকদের নাগাল পাওয়ার পরে ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে পাঠানো হবে পাইপ। এরপর পাইপের সাহায্যে শ্রমিকদের ওপরে নিয়ে আসার চেষ্টা চালানো হবে। সুড়ঙ্গ খননের জন্য দিল্লি থেকে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজে করে বিশালকায় যে খননযন্ত্রটি আনা হয়েছিল, খননকাজ করার সময় বড় প্রস্তরখণ্ডে (বোল্ডার) আঘাত হানার কারণে সেটি খননে ব্যর্থ হয়। উদ্ধারকর্মীরা সেটি আবার চালু করতে গেলে শুক্রবার বিকট শব্দ হওয়ার এ ঘটনা ঘটে।

সরকারের মহাসড়ক ও অবকাঠামো সংস্থা জানায়, শুক্রবার মধ্যরাতে সুড়ঙ্গে হঠাৎ বিকট শব্দের কারণে আতঙ্ক তৈরি হয়। উদ্ধারকাজ চালালে আরও ধস হতে পারে, এ আশঙ্কায় উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়। আজ উড়োজাহাজে আরেকটি খননযন্ত্র আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

তবে এ ঘটনার আগে থেকেই উদ্ধার কাজের গতি ছিল ধীর। এর কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, অনবরত এদিক–সেদিক থেকে মাটি ধসে পড়তে থাকা ও বিশালকায় খননযন্ত্র দিয়ে খননের কাজ চালানোয় ব্যর্থতা।

সরকারের সড়ক ও অবকাঠামো করপোরেশনের পরিচালক আনশু মনীষ শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, এদিন পর্যন্ত ২৪ মিটার (৭৮ ফুট) সুড়ঙ্গ খনন করা হয়েছে। আটকা পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আরও ৩৬ মিটার (১১৮ ফুট) খনন করতে হবে। আর এ জন্য সময় লাগবে।

আটকা পড়া ব্যক্তিদের সঙ্গে রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছেন উদ্ধারকর্মীরা। এ ছাড়া ৬ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে খাবার, পানি, অক্সিজেন ও ওষুধ পাঠানো হচ্ছে। কিন্ত যাঁরা আটকা আছেন, তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর।

উদ্ধারকর্মীদের একজন মোহাম্মদ রিজওয়ান টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমরা তাঁদের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছি। তাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছি। কিন্ত এরপরও তাঁদের সবারই শুধু একটাই প্রশ্ন, ‘আপনারা কখন আমাদের এখান থেকে বের করে নিয়ে যাবেন।’