ইলিশ গভীর জলের মাছ। নদী ও সাগরেই পাওয়া যায়। সেই ইলিশ পুকুরে চাষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মৎস্যবিজ্ঞানীরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। লক্ষ্য একটাই, পুকুরে ইলিশ চাষে সাফল্য এলে বাজারে মাছটি সহজলভ্য হবে। ফলে বাঙালির প্রিয় ইলিশের চাহিদাও অনেকটা মেটাতে পারবে পুকুরের ইলিশ।
এই পরিকল্পনা থেকে পশ্চিমবঙ্গের ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র (সিফরি) রাজ্যের তিন জায়গায় পুকুরে ইলিশ চাষের উদ্যোগ নেয়। উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাজ্যের ব্যারাকপুর মহকুমার রহড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপ ও পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের জামিতিয়া গ্রামের পুকুরে ইলিশ চাষ করা হয়। কোলাঘাটে দুটি এবং বাকি জায়গাগুলোতে একটি করে পুকুরে ৩৬ মাস আগে ১০ থেকে ১৫ গ্রাম ওজনের ইলিশের পোনা অবমুক্ত করা হয়। এরপর থেকে সেখানে ইলিশের পরিচর্যা শুরু হয়।
আকার কেমন ও ওজন কত, তা দেখতে সম্প্রতি কোলাঘাটের জামিতিয়া গ্রামের পুকুর থেকে ইলিশ ধরা হয়। এতে দেখা যায়, এখানকার পুকুরের সবচেয়ে বড় ইলিশটির ওজন ৬৮৯ গ্রাম। বাকি ইলিশের ওজন ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রামের মধ্যে।
পুকুরে ইলিশ চাষ সম্পর্কে জানতে সিফরির একজন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিদেশি সংবাদপত্রের সঙ্গে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি প্রয়োজন। তাই তিনি প্রথম আলোকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, অন্য দুই জায়গার ইলিশের আকার ও ওজনও প্রায় একই রকম হয়েছে। কোনো কোনোটির ওজন হয়েছে ৫০০ গ্রামের বেশি।
আরও জানা যায়, পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটের ওই দুই পুকুরে রূপনারায়ণ নদীর জল ঢোকানো হয়েছিল।
মৎস্যবিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণত তিন বছরে ইলিশ এত বড় হয় না। তাই এত বড় কীভাবে হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সিফরির বিজ্ঞানীরা মনে করেন, কোলাঘাটের পুকুরে দুটিতে প্রচুর খাবার দেওয়া হয়েছিল। সে কারণেই ইলিশের আকার হয়তো এত বড় হয়েছে।
পুকুরে ইলিশ চাষের সাফল্যে সিফরির বিজ্ঞানীরা দারুণ খুশি। তাঁরা বলেছেন, সাফল্যের এই খবর অচিরেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
তবে পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খন্ডের গঙ্গা নদীতে আগে থেকেই কৃত্রিমভাবে ইলিশের চাষ হচ্ছে। সেখানে নিয়মিত ইলিশের পোনা অবমুক্ত করা হয়।