উত্তর প্রদেশে নামাজের জন্য বাস থামিয়ে চালকের সহকারী বরখাস্ত, পরে আত্মহত্যা

লাশের প্রতীকী ছবি
ছবি: রয়টার্স

চলন্ত বাসে চালকের সহকারীকে এক মুসলিম দম্পতি অনুরোধ করেন, তাঁদের নামাজ আদায়ের জন্য যেন বাসটি থামানো হয়। তাঁদের অনুরোধ রাখতে সেই হিন্দু সহকারী বাস থামান। এ ঘটনায় অন্য বাসযাত্রীরা প্রতিক্রিয়া জানান। পরে স্থানীয় বাস চলাচল কর্তৃপক্ষ বাসের ওই সহকারী ও চালককে চাকরিচ্যুত করে। কোথাও চাকরি না পেয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে গত সোমবার আত্মহত্যা করেন মোহিত যাদব নামের ওই সহকারী।

ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ঘটেছে এমন ঘটনা। পরিবার বলছে, মানবতাবোধের কারণে মোহিতকে জীবন দিতে হলো।

ঘটনাটি চলতি বছরের জুনের। উত্তর প্রদেশের রাজ্য সরকার পরিচালিত বাসটি বেরেলি থেকে দিল্লির দিকে যাচ্ছিল। পথে ওই দুই যাত্রীর নামাজ আদায়ের সুযোগ করে দিতে তিনি বাসটি থামান।

ঘটনার সময় ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বাস থামানোর আগে যাত্রীদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করছিলেন মোহিত। তিনি বলছিলেন, ‘আমরাও হিন্দু। হিন্দু বা মুসলিম কোনো বিষয় নয়। দুই মিনিটের জন্য বাস থামালে কী এমন হয়ে যাবে।’

বাসের এক যাত্রীই ভিডিওটি ধারণ করেন। এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই উত্তর প্রদেশের পরিবহন বিভাগ বাসটির চালক ও তাঁর সহকারী মোহিত যাদবকে বরখাস্ত করে।

মোহিত যাদব ছিলেন পরিবারের বড় সন্তান। তিনি ওই বাসে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতেন। বেতন পেতেন ১৭ হাজার রুপি। আট সদস্যের পরিবারটি মোহিতের আয়েই চলত। বরখাস্ত হওয়ার পর অনেক জায়গায় চাকরির আবেদন করেন মোহিত। তবে কোথাও চাকরি পাচ্ছিলেন না।

মোহিত যাদবের স্ত্রী রিংকি যাদব অভিযোগ করেন, উত্তর প্রদেশের পরিবহন বিভাগ তাঁর স্বামীর বক্তব্য শোনেনি। বেরেলির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপককে মোহিত ফোন দিয়েছিলেন। তিনিও মোহিতের কথাগুলো শোনেননি। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এ ঘটনায় হতাশ হয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
সাংবাদিকদের রিংকি যাদব বলেন, ‘আমার স্বামী মানবতা দেখানোর মাশুল দিয়েছে।’