ভারতীয় পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যমে শেষ কবে বাংলাদেশ এভাবে জায়গা দখল করেছিল জানা নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোই–বা কবে এভাবে সরগরম হয়েছে, সেটাও গবেষণার বিষয়। স্মরণাতীতকালের মধ্যে সম্ভবত এই প্রথম সর্বভারতীয় প্রচারমাধ্যমে টানা ১০ দিন ধরে বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের খবর জ্বলজ্বল করছে।
এভাবে খবরে থাকা যদিও বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজ ও অর্থনীতির পক্ষে মঙ্গলজনক নয়। অনাবশ্যক ধ্বংস, আত্মঘাতী সংঘর্ষ, পারস্পরিক সন্দেহ ও বিশ্বাসহীনতা নিয়ে খবর হওয়া কোনো দেশের কাম্য হতে পারে না। কাম্য নয় ভারতের কাছেও।
তবু বাংলাদেশের ঘটনাবলি ও সম্পর্কের স্পর্শকাতরতার বিচারে দীর্ঘতম সীমান্ত থাকা পরমবন্ধু ও প্রতিবেশী এই দেশের সাম্প্রতিকতম চ্যালেঞ্জের বিষয়ে ভারত অতি সতর্ক। তাই বাংলাদেশে যা ঘটে চলেছে, তা ‘সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলা ছাড়া ভারতের দিক থেকে অন্য মন্তব্য করা হয়নি। বাড়তি বক্তব্য, ভারতের আশা—পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।
ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয় বা ত্রিপুরার গণমাধ্যমে বাংলাদেশের খবর যতটুকু দেখা যায়, তার ছিটেফোঁটা গুরুত্বও পায় না সর্বভারতীয় গণমাধ্যমে। চীন ও পাকিস্তান নিয়ে সর্বভারতীয় গণমাধ্যমের আগ্রহ চিরকালীন। এ দুই দেশকে যে গুরুত্ব দেওয়া হয়, বাংলাদেশ নিয়ে তার কিঞ্চিৎও দেখা যায় না। যদিও এবার দেখা গেল হিংসার ভয়াবহতা, ধ্বংসের ব্যাপ্তি ও মৃত্যুর বহরের দরুন। সর্বভারতীয় গণমাধ্যম থেকে এখনো সেই রেশ মুছে যায়নি।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় গণমাধ্যম বাদ দিলে কোটা আন্দোলন নিয়ে সর্বভারতীয় গণমাধ্যম ১৬ জুলাই পর্যন্ত নীরব ছিল। তত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ নিয়ে যতটুকু আগ্রহ ছিল, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকে কেন্দ্র করে।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় গণমাধ্যম বাদ দিলে কোটা আন্দোলন নিয়ে সর্বভারতীয় গণমাধ্যম ১৬ জুলাই পর্যন্ত নীরব ছিল। তত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ নিয়ে যতটুকু আগ্রহ ছিল, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকে কেন্দ্র করে। এর নেপথ্যে ছিল হাসিনার ভারত সফর ও তিস্তা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে নতুন বোঝাপড়া, যেদিকে চীনও নজর রেখেছিল।
চীন সফর নিয়ে ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের দিকে ভারতের নজর বেশি নিবদ্ধ ছিল। সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর একটি মন্তব্য ঘিরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠবে, তা ছিল কল্পনার অতীত।
তারপর ১৭ জুলাই সব প্রভাতি সংবাদপত্রে সেটাই হলো খবর। বাংলা তো বটেই, সর্বভারতীয় ইংরেজি ও হিন্দি গণমাধ্যমেও ছাপা হলো ছয়জনের মৃত্যু, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সহিংস হয়ে ওঠার খবর। আনন্দবাজারের শিরোনাম হলো, ‘আটক মৈত্রী (এক্সপ্রেস), ছাত্র সংঘর্ষে বাংলাদেশজুড়ে নিহত ৬’। সঙ্গে রয়টার্সের পাঠানো ঢাকার রাস্তায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ছবি। একই খবর ছাপা হলো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ অন্যান্য গণমাধ্যমেও।
পরের দিন পুলিশের গুলির সামনে আবু সাঈদের বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার ছবি ভারতীয় গণমাধ্যমেও ভাইরাল হয়ে যায়। বার্তা সংস্থা এপি, রয়টার্সের পাঠানো ছবি, তাদের ও পত্রিকার নিজস্ব সংবাদদাতাদের প্রতিবেদনের সঙ্গে কোটা আন্দোলন নিয়ে বিভিন্ন মানুষ ও বিশ্লেষকের মতামত ছাপা হতে থাকে।
১৭ জুলাই সব প্রভাতি সংবাদপত্রে সেটাই হলো খবর। বাংলা তো বটেই, সর্বভারতীয় ইংরেজি ও হিন্দি গণমাধ্যমেও ছাপা হলো ছয়জনের মৃত্যু, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সহিংস হয়ে ওঠার খবর। আনন্দবাজারের হেডিং হলো, ‘আটক মৈত্রী (এক্সপ্রেস), ছাত্র সংঘর্ষে বাংলাদেশজুড়ে নিহত ৬’।
১৮ জুলাই টাইমস অব ইন্ডিয়ার শিরোনাম, ‘বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাইটার্স অ্যাট দ্য রিসিভিং এন্ড অব কোটা ব্যাকল্যাশ’। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে তিন কলাম শিরোনাম, ‘ভায়োলেন্স ওভার গভর্নমেন্ট জব কোটা: বাংলাদেশ আর্জেস অল ইউনিভার্সিটিজ টু ক্লোজ’। প্রতিবেদনের সঙ্গে ছাপা হয় এপির পাঠানো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জমায়েতের ছবি। নিহত ব্যক্তিদের ছয়টি কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে কোটা আন্দোলনকারীদের প্রতীকী জানাজার ছবি।
১৯ জুলাই থেকে পশ্চিমবঙ্গের কাগজগুলোয় বাংলাদেশ চলে আসে প্রথম পৃষ্ঠায়। সর্বভারতীয় দৈনিকে বের হতে থাকে একাধিক স্টোরি। টানা পাঁচ দিন সেই অবস্থান অপরিবর্তিত থাকে। ১৯ জুলাই আনন্দবাজারের লিড, পাঁচ কলামজুড়ে শিরোনাম, ‘ছাত্র–পুলিশ সংঘর্ষ তুঙ্গে, আলোচনার প্রস্তাব খারিজ, বন্ধ ইন্টারনেট’। মূল শিরোনাম ‘বাংলাদেশে হত ৩২’। পঞ্চম কলামে ঢাকার মর্গে নিহত ছেলেকে দেখে মায়ের আহাজারির হিউম্যান স্টোরির হেডিং, ‘চাকরি না হয় না দিবি, কিন্তু ছেলেটাকে মারলি কেন?’
সেদিনই আনন্দবাজারের সম্পাকদীয় শিরোনাম ‘ক্ষোভাগ্নি’। তাতে লেখা হয়, ‘...মতবৈষম্য যত দূরই হোক না কেন, উভয় পক্ষই যদি হিংসার আশ্রয় নেয় এবং সেই হিংসা যদি সীমা ছাড়িয়ে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্দশার আর শেষ থাকে না।...সুতরাং জনকল্যাণের দিকে তাকিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনেই ফিরে যেতে হবে। এবং প্রশাসনের তরফেও অহিংস পথেই সেই জন–আন্দোলনের মোকাবিলা করতে হবে।’ সম্পাদকীয়তে এ কথাও লেখা হয়, ‘...ক্রোধের বিস্ফোরণ এতটা লাগামছাড়া হয়ে গেল কোন নেতৃত্বের উসকানিতে, তা অবশ্যই জানা জরুরি।’
সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘এই আন্দোলনের সঙ্গে অনেকে নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় ভারতের “মণ্ডল কমিশনবিরোধী আন্দোলন”–এর মিল খুঁজে পাচ্ছে। কিন্তু সেই আন্দোলনকে ভাঙার রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে তৎকালীন শাসক দল পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় যায়নি। এ ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভয় দেখিয়ে দমিয়ে দিতে ছাত্রলীগকে রাস্তায় নামানো আওয়ামী লীগের পক্ষে কার্যত বুমেরাং হয়ে গিয়েছে।’
১৯ জুলাই হিন্দুস্তান টাইমসের বিদেশ পৃষ্ঠার এক–চতুর্থাংশ জুড়ে বাংলাদেশ। ছবি, লেখা ও গ্রাফিকসে। শিরোনাম, ‘স্টেট টিভি হেডকোয়ার্টার্স সেট অন ফায়ার অ্যাজ ডেথ টোল রাইজেস টু ৩২’। গ্রাফিকসে ছাত্ররা কেন বিক্ষোভের পথে।
১৯ জুলাই হিন্দুস্তান টাইমসের বিদেশ পৃষ্ঠার এক–চতুর্থাংশজুড়ে বাংলাদেশ। ছবি, লেখা ও গ্রাফিকসে। শিরোনাম, ‘স্টেট টিভি হেডকোয়ার্টার্স সেট অন ফায়ার অ্যাজ ডেথ টোল রাইজেস টু ৩২’। গ্রাফিকসে ছাত্ররা কেন বিক্ষোভের পথে।
পরের দিন ২০ জুলাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘এক্সপ্লেন্ড’ সেকশনের অর্ধেকজুড়ে কোটা বিশ্লেষণ। বাংলাদেশে কোটার ইতিহাস, আদালতের নির্দেশ, সংবিধানের বৈধতা ও কোটা নিয়ে বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, দেশের অর্থনীতির হাল ও বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ প্রতিবেদন। নিবন্ধের একেবারে শেষে ‘রাজাকার’ বৃত্তান্ত। কোনো রকম অভিমতের মধ্যে না গিয়ে কোটা আন্দোলনের ইতিবৃত্ত তারা তুলে ধরে।
২০, ২১ ও ২২ জুলাই দেশের সব ভাষাভাষী কাগজের প্রথম পৃষ্ঠা বাংলাদেশের দখলে ছিল। নিহত মানুষের সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে ৭৫, তারপর ১২৩ হয়ে যাওয়া, সেনা নামানো, কারফিউ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশের খবরের পাশাপাশি ভারতীয় শিক্ষার্থী ও অন্যদের উদ্ধারের কাহিনি সর্বত্র। বাংলা কাগজে সেই সঙ্গে ছাপা হতে থাকে প্রাণ হাতে পালিয়ে আসা ও উদ্ধার পাওয়া মানুষের রোমহর্ষ কাহিনি।
হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রথম পৃষ্ঠাজুড়ে ছাপা হতে থাকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের খণ্ড খণ্ড সংঘর্ষের ছবি, সেনা টহল, আটকে পড়া ভারতীয়দের জন্য সরকারি উদ্বেগ ও উদ্ধারের খবর।
এই এত দিন ধরে ভারত সরকারের তরফ থেকে একটিও মন্তব্য করা হয়নি। একবারের জন্যও মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি। ভারত যে চিন্তিত, সেটুকু পর্যন্ত বলা হয়নি। স্বাভাবিক কারণেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়ালের একটিই জবাব, বাংলাদেশে যা চলছে, তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
স্পষ্টতই বোঝা যায়, নানা কারণে ভারত অতিরিক্ত সতর্ক। দুই দেশের ‘সোনালি সম্পর্ক’ সত্ত্বেও বাংলাদেশে ভারতবিরোধিতার বহর, ব্যাপ্তি ও প্রবণতা বেড়ে যাওয়া, কোটা আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে ভারতবিরোধী স্লোগান ওঠা নিয়ে ভারত বিব্রত। অতি সতর্কতার কারণও তা–ই।
২০, ২১ ও ২২ জুলাই দেশের সব ভাষাভাষী কাগজের প্রথম পৃষ্ঠা বাংলাদেশের দখলে ছিল। নিহত মানুষের সংখ্যা ৩২ থেকে বেড়ে ৭৫, তারপর ১২৩ হয়ে যাওয়া, সেনা নামানো, কারফিউ, দেখামাত্র গুলির নির্দেশের খবরের পাশাপাশি ভারতীয়দের পড়ুয়া ও অন্যদের উদ্ধারের কাহিনি সর্বত্র।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সুপ্রিম কোর্ট কোটার পরিমাণ ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত জানানোর সময় থেকে। ২২ জুলাই সেই খবর স্থান পায় সব কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায়। সেদিনই দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সঞ্জয় কে ভরদ্বাজ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে উপসম্পাকদীয় নিবন্ধে কোটা ইতিবৃত্ত বর্ণনা করে লেখেন, ‘হাসিনা সরকার মনে করে তাদের উচ্ছেদ করাই এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য। কিন্তু এটাও ঠিক, বেকারত্ব সে দেশে উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে রাজনৈতিক মতপার্থক্য প্রকাশের জন্য সহিংসতার আশ্রয় গ্রহণ দেশের স্থিতিশীলতাকেই নষ্ট করবে। হাসিনার উপর্যুপরি চতুর্থ জয় বাংলাদেশকে তুলনামূলকভাবে রাজনৈতিক নিরাপত্তা জুগিয়েছে এবং এর ফলে অর্থনৈতিক সুরাহাও পাওয়া গেছে। ২০২৬ সালে তারা মধ্য আয়ের দেশ হতে চলেছে। এই সন্ধিক্ষণে বেকারত্বের সমস্যা সতর্কভাবে মেটানো দরকার। সংস্কারের রাস্তায় হাঁটতে গেলে দেশকে বৃহত্তর সংলাপের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।’
একই দিনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সম্পাকদীয় শিরোনাম, ‘ঢাকা’স গ্রিম টেস্ট’। তাতে আদালতের রায়কে নিরাময় স্পর্শের ছোঁয়ার জন্য ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। লেখা হয়, ‘বিরোধীদের সমালোচনা করলেও হাসিনা সরকার সাম্প্রতিক কালের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিচ্যুতিগুলো উপেক্ষা করতে পারে না। বিশেষ করে ছাত্রসমাজের অসন্তোষ।’
মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সংরক্ষণ ‘বিতর্কিত’ জানিয়ে সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, ‘হাসিনা সরকার পরিস্থিতির মোকাবিলা ঠিকমতো করতে পারেনি। ক্ষোভ তাতে বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ এশিয়ার দ্রুততম অর্থনীতি। কিন্তু তা আকাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান দিতে পারেনি। দুর্নীতির অভিযোগ ও হাসিনার কর্তৃত্ববাদী চরিত্রও ক্ষোভ বাড়িয়েছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মৌলবাদীদের যোগদান ভারতের পক্ষে বিশেষ উদ্বেগের। সে দেশে ভারতবিরোধী মনোভাব নতুন নয়। কিন্তু তা কখনো সীমা ছাড়ায়নি। এই জনরোষ যাতে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলে না ছড়ায়, সে জন্য নরেন্দ্র মোদিকে সচেষ্ট হতে হবে।’
২২ জুলাই টাইমস অব ইন্ডিয়ার সম্পাদকীয়ও বাংলাদেশ নিয়ে। ‘ডিস্টার্বিং ইন ঢাকা’ শিরোনামে বলা হয়, ‘হাসিনার বাইরেও ভারতকে চিন্তা করতে হবে’।
সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘আজকের বাংলাদেশ যা দেখছে, তা কোটা রাজনীতি, বিরোধী রাজনীতির স্থানাভাব ও সরকারের কর্তৃত্ববাদী চরিত্রবৃদ্ধির প্রাণঘাতী সমন্বয়’।
পরিস্থিতি বর্ণনার পর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ‘আন্দোলনকারীদের রাজাকারের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হয়নি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ক্রমবর্ধমান কর্মহীনতার সমস্যা। হিংসাত্মক কোটা আন্দোলনের সঙ্গে ভারতের পরিচয় আছে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো এত খারাপ হাল হয়নি। বাংলাদেশের সমস্যা হলো, তারা গণতন্ত্রের প্রাথমিক শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি। কার্যকর বিরোধী পক্ষ নেই। নির্বাচন অবাধ নয়। বিচারব্যবস্থা স্বাধীন নয়।’
এতে আরও লেখা হয়, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনরোষ ভারতের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। আওয়ামী–উত্তর বাংলাদেশ পাকিস্তানের ইশারায় চালিত হোক, ভারত নিশ্চিতভাবেই তা চাইবে না। ভারতের উচিত বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক মতাবলম্বীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা।’
বাংলাদেশের কোটা আন্দোলন ভারতের গণমাধ্যমকেও নতুনভাবে ভাবতে শেখাচ্ছে।