ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি

সীমান্তে টহল নিয়ে চীন-ভারত মতৈক্য

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা হিসেবে পরিচিত দুই দেশের সীমান্তে টহল নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সমঝোতার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের সংঘর্ষের আগে দুই দেশের সেনারা যেসব জায়গায় টহল দিতেন, সেখানে যেতে পারবেন। আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী দিনে সেনা প্রত্যাহারের পথ প্রশস্ত হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামীকাল মঙ্গলবার ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে রাশিয়ায় যাচ্ছেন। তাঁর এই সফরের আগে পররাষ্ট্রসচিবের এই ঘোষণাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অবশ্য পররাষ্ট্রসচিব স্পষ্ট করে জানাননি, এর ফলে সীমান্ত সংঘাতের আগে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর দুই দেশের সেনাবাহিনী যে অবস্থানে ছিল, সেখানে ফিরে যাবে কি না। আর সম্প্রতি টহলের জন্য যে ‘বাফার জোন’ তৈরি হয়েছিল, সেটির কী হবে।

২০২০ সালের জুন মাসে পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে বহু হতাহত হয়। অভিযোগ, সেই সংঘর্ষের আগে থেকেই চীনের সেনারা ভারতীয় ভূখণ্ডের অনেকটাই দখল করে নিয়েছিল।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের অভিযোগ, লাদাখের প্রায় দুই হাজার বর্গ কিলোমিটার ভারতীয় ভূখণ্ড চীন দখল নিয়েছে। লাদাখ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় সংসদে বিতর্কের দাবিও সরকার এখন পর্যন্ত মানেনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের লাদাখ পরিস্থিতি দেখাতে নিয়ে যাওয়ার আরজিও মানা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরের প্রাক্কালে বিশেষ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব এই প্রসঙ্গে বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ভারত ও চীন কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে আলোচনা চালাচ্ছে। সেই আলোচনা থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টহল নিয়ে এই সমঝোতায় পৌঁছেছে দুই দেশ। এই সমঝোতার ভিত্তিতে সেনা প্রত্যাহার ও ২০২০ সালে তৈরি হওয়া সমস্যা এড়ানো সম্ভব হবে।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই আরও নির্দিষ্ট করে জানিয়েছে, ডেপসাং ও ডেমচক এলাকায় টহল নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। ২০২০ সাল থেকে দুই দেশের সেনা পর্যায়ের ২০টি বৈঠক হয়েছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার স্থিতাবস্থা বহাল রাখা নিয়ে। ডেপসাং ও ডেমচক নিয়ে দুই দেশ এর পরও সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি। পররাষ্ট্রসচিব অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলেননি, ঠিক কোন কোন এলাকায় টহল নিয়ে দুই দেশের সমঝোতা হয়েছে।

রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছে। সে প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তিনি বলেন, অনেকের সঙ্গেই কথা হচ্ছে। তবে এখনই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে কিছু চূড়ান্ত হয়নি।