ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

বিগত ৫-৬ বছরে এই উপমহাদেশে অনেক বেশি সংহতি দেখেছি: জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারত ভাগের পর বিগত ৫-৬ বছর ভারতীয় উপমহাদেশে তাঁরা অনেক বেশি আঞ্চলিক সংহতি দেখতে পেয়েছেন। শনিবার নয়াদিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

‘সরদার প্যাটেল লেকচার অন গভর্ন্যান্স’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল আইসি সেন্টার। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মধ্যে সড়ক ও রেল যোগাযোগের ওপর জোর দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর আরও বলেন, ভারতের পরিশোধনাগার থেকে নেপাল ও বাংলাদেশে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত ‘প্রতিবেশী আগে’ নীতি গ্রহণ করেছে। আর বড় দেশ হিসেবে ভারতকেই সবচেয়ে বেশি সম্পদের সংস্থান করতে হবে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ এশীয় সহযোগিতা সংস্থা-সার্কের বৈঠক কেন হচ্ছে না— এমন প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, এর মানে এই নয় যে, আঞ্চলিক কর্মকাণ্ড থমকে আছে। তিনি বলেন, বাস্তবে বিগত ৫-৬ বছরে ভারতীয় উপমহাদেশে অনেক বেশি আঞ্চলিক সংহতি দেখে এসেছি।

যতক্ষণ না আন্তসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ না করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সংলাপে না বসার অবস্থানে ভারত অনড় বলেও জানান জয়শঙ্কর।

সার্কের বিষয়ে অগ্রগতি না হওয়ার পেছনেও পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে সার্কের কর্মকাণ্ডে অগ্রগতি হচ্ছে না। একেবারে স্বাভাবিক কারণে আমরা সার্কের বৈঠক করছি না। সেটা হলো সার্কের এক সদস্য অন্তত আরেকটি সদস্যের বিরুদ্ধে আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের কাজটি করছে, সম্ভবত আরও বেশি সদস্যের বিরুদ্ধেও...।’

জয়শঙ্কর বলেন, সন্ত্রাসবাদ এমন একটি বিষয় যা অগ্রহণযোগ্য। এমন বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও যদি কোনো প্রতিবেশী এটা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যায়, তাহলে সার্কের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চলতে পারে না।

দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ সহযোগিতা সংস্থা হিসেবে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে সম্প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

পাকিস্তানে অনুষ্ঠেয় সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপের পরিকল্পনা নেই বলেও জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জোর দিয়ে বলেন, কেবল এসসিও সম্মেলনে যোগ দিতেই তিনি এ মাসের মাঝামাঝি পাকিস্তান যাচ্ছেন।

এসসিওর নবাগত সদস্যদেশগুলোর একটি পাকিস্তান। দেশটিতে অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে ঐতিহ্য অনুযায়ী সরকারপ্রধানদের অংশ নেওয়ার কথা। তবে ভারতের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ সফরে যাচ্ছেন। স্বভাবতই চিরবৈরী দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে এই সফরে জয়শঙ্করের ওপর নজর থাকবে সংবাদমাধ্যমের।