লাদাখ নিয়ে কথার লড়াই রাহুল গান্ধী আর জয়শঙ্করের

রাহুল গান্ধী
ফাইল ছবি: এএনআই

ভারত জোড়ো যাত্রার অন্তিম দিনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, লাদাখে অন্তত দুই হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা চীন দখল করে নিয়েছে। গত রোববার জম্মু-কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে রাহুল বলেন, ‘বারবার আমি এই কথা বলে আসছি।

লাদাখে চীন আমাদের ভূখণ্ড দখল করে বসে নেই বলে সরকারের বক্তব্য বা মনোভাব অত্যন্ত বিপজ্জনক। এ বক্তব্য চীনকে আরও বেশি আগ্রাসী হতে সাহসী করে তুলবে। তাদের আস্থা বাড়িয়ে দেবে।’

রাহুল বলেন, চীনকে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া দরকার যে তোমরা আমাদের জমিতে বসে আছ। এটা আমরা কিছুতেই বরদাস্ত করব না।

এস জয়শঙ্কর

পূর্ব লাদাখের গলওয়ান এলাকায় ২০২০ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছিল। রাহুল গান্ধী তার পর নিয়মিত বলে আসছেন, চীন নতুন করে ভারতীয় জমি দখল করেছে। অথচ ভারত সরকার তা অস্বীকার করছে। এমন ভাব দেখাচ্ছে যেন, নতুন করে কোনো জমি চীন কব্জা করেনি। তাঁর অভিযোগ, এই অস্বীকারের জন্য চীন লাভবান হয়েছে।

সেনাবাহিনীর মধ্যে আলোচনায় তারা সরকারি অভিমতের উল্লেখ করে দখল নেওয়া এলাকা ছেড়ে পিছিয়ে যেতে অস্বীকার করছে। সংবাদ সম্মেলনে রাহুল বলেন, সম্প্রতি কিছু অবসরপ্রাপ্ত সেনানীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। লাদাখের এক প্রতিনিধিদলও জানিয়েছে, দুই হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা চীন দখল করে নিয়েছে। ওই সংঘর্ষের আগে ৬৫টি এলাকায় ভারতীয় বাহিনী টহল দিত।

এখন ২৬টিতে ভারতীয় বাহিনী যেতেই পারে না। রাহুল বলেন, সম্প্রতি দিল্লিতে দেশের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্মেলনে ওই প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। সেই সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল উপস্থিত ছিলেন।

জমি বেহাত হওয়ার এই অভিযোগ রাহুল নতুন করলেন না। আগেও বারবার এই অভিযোগ তিনি করেছেন এবং সরকার তা খণ্ডন করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও গতকাল আবার সেই অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, জমি দখলের যে কথা বলা হচ্ছে, তা ঘটেছিল ১৯৬২ সালের যুদ্ধের সময়।

মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে তাঁর লেখা এক বইয়ের মারাঠি অনুবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠানে রাহুলের নাম না করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘তাঁরা মাঝেমধ্যে জেনেশুনে এই অপপ্রচার করেন। তাঁরা জানেন, এটা সত্য নয়। এই জমি ১৯৬২ সালে চীন দখল করেছিল। কিন্তু সে কথা তাঁরা বলেন না। এমন ভাব দেখান যেন কাল-পরশু ওই ঘটনা ঘটেছে।’

পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে জয়শঙ্করের জ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন রাহুল। বলেছিলেন, ‘বলা উচিত নয়, তবু, তাঁর জ্ঞানের পরিধি আরও গভীর হওয়া দরকার।’ এই প্রসঙ্গে রাহুলকে কটাক্ষ করে জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমার জ্ঞানগম্যি কম হতেই পারে।

তা বাড়ানোর জন্য আমি আমাদের সেনাবাহিনী, গোয়েন্দাদের কাছে যাব। কিন্তু চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে তাঁর কাছে জ্ঞান বাড়ানোর পাঠ নিতে যাব না।’ ২০১৭ সালে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রাহুল গান্ধী।