কর্ণাটকে অমিত শাহর বিরুদ্ধে এফআইআর

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের নির্বাচনী প্রচার জোরালো হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে বিজেপি–কংগ্রেস রাজনৈতিক চাপান–উতোর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিরুদ্ধে ‘হিংসায় প্ররোচনা’ দেওয়ার অভিযোগে কংগ্রেস আজ বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে এফআইআর করেছে। একই অভিযোগ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনেও।

কংগ্রেস সভাপতিকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বও। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে কংগ্রেস সভাপতি ‘বিষধর সাপের’ সঙ্গে তুলনা করে নিজেদের পতন ডেকে এনেছেন। বিজেপি বলেছে, খাড়গের জানা উচিত, নরেন্দ্র মোদিকে ‘মওত কা সওদাগর’ বলে সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের কী হাল হয়েছিল।

পারস্পরিক এ তরজার মুখে আগামী শনিবার দুই দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী কর্ণাটক যাবেন। একাধিক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি রোড শোতে তিনি অংশ নেবেন।

কর্ণাটক রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার, এআইসিসির রাজ্য পর্যবেক্ষক রণদীপ সুরযেওয়ালা ও রাজ্যের অন্যতম শীর্ষ নেতা পরমেশ্বর আজ বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে অমিত শাহর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। সংবাদমাধ্যমকে শিবকুমার বলেন, ‘গত বুধবার শহরে নির্বাচনী প্রচারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেছেন, রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধবে। কী করে এমন কথা তিনি বলেন? আমরা তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দাখিল করেছি। নির্বাচন কমিশনেও অভিযোগ জানিয়েছি।’

এফআইআরে বলা হয়েছে, অমিত শাহ তাঁর ভাষণে মিথ্যা অভিযোগে কংগ্রেসের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চেয়েছেন। জনতাকে খেপিয়ে তুলতে চেয়েছেন। হিংসা ছড়াতে সচেষ্ট হয়েছেন। অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে অমিত শাহর ভাষণের অংশবিশেষ কংগ্রেস জমা দিয়েছে।

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। বৃহস্পতিবার এক টুইটে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বিষধর সাপ বলেছেন। কংগ্রেস কতটা মরিয়া, এটাই তার প্রমাণ। মোদিকে “মওত কা সওদাগর” বলে কংগ্রেসের কী হাল হয়েছিল, তা সবার জানা।’

বিজেপির প্রচারের জবাবে খাড়গে বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেননি। বিজেপির আদর্শ বিষাক্ত জানিয়ে বলেছেন, ওই আদর্শ গ্রহণ করলে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু অবধারিত।

কর্ণাটকে কোণঠাসা বিজেপি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওপর ভর করে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী দিল্লি থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ভাষণ দেন। বিজেপির বুথ পর্যায়ের কর্মীদের উদ্দেশে ওই ভাষণে দলের নীতির ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি কংগ্রেসকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, যে দলের ‘ওয়ার‌েন্টি’ শেষ হয়ে গেছে, সেই দলের দেওয়া প্রতিশ্রুতির ‘গ্যারান্টি’ নেই। পুরোপুরি অর্থহীন।

কর্ণাটকে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কংগ্রেস এবার বহু জনমুখী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র গৃহে মাসে ২০০ ইউনিট বিদ্যুৎ ফ্রি, ‘অন্ন ভাগ্য’ প্রকল্পে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারীদের প্রত্যেক সদস্যকে বিনা মূল্যে মাসে ১০ কেজি করে চাল, ‘গৃহলক্ষ্মী’ প্রকল্পে পরিবারের বয়স্ক নারীকে মাসে ২ হাজার টাকা, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী বিএ পাস বেকারদের দুই বছর মাসে ৩ হাজার ও ডিপ্লোমাধারীদের দেড় হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের প্রতিশ্রুতিকে অর্থনীতির বিপদ বলে মনে করেন।