এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি, এরপর ছয়টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে হারের পর রাজ্য রাজনীতিকে চাঙা রাখতে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে আলাদা রাজ্য গড়ার দাবি তুলেছে। সেই অস্ত্রকে সামনে এনে বিজেপি এখন মেতে উঠেছে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন নিয়ে। তবে বিজেপির এই উদ্যোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘আসুক না বিজেপি বাংলা ভাগ করতে, সঠিক জবাব পেয়ে যাবে।’ আগামী সোমবার বিধানসভায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনবে তৃণমূল।
অবশ্য বিজেপি বঙ্গভঙ্গের দাবি তুললেও দলটির বিধায়ক ও রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁরা বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে। তাঁরা চান না, এই ছোট রাজ্য আরও টুকরা হোক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলা বিধানসভাকে বাদ দিয়ে যাঁরা বঙ্গভঙ্গের কথা বলছেন, তাঁরা সন্ত্রাসের দল। বিভাজনের দল। তাঁদের কোনো কথাই আমি মানি না। এই বাংলার মানুষ একযোগে রুখে দাঁড়াবে বিজেপির এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘আসুক না ওরা বিধানসভায়? অংশ নিক ভোটাভুটিতে। বঙ্গভঙ্গের স্বপ্ন একদম ধূলিসাৎ হয়ে যাবে।’
আগামী সোমবার ওই প্রস্তাব পেশের সময় মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় হাজির থাকবেন। বিজেপিও জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার তারাও বিধানসভার ফ্লোরে থাকবে।
গত সোমবার রাতে বিজেপির নেতা ও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মতুয়া নেতা শান্তনু ঠাকুর বলেছেন, বাংলায় জনবিন্যাসে ভারসাম্য রাখতে ঝাড়খন্ডের বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবের প্রস্তাবের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, মালদহ ও মুর্শিদাবাদকে প্রস্তাবিত কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে যুক্ত করা হোক। মুর্শিদাবাদ ও মালদহের বিজেপির বিধায়কেরা সমর্থন জানিয়েছেন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবিকে।
তবে বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, বিজেপির যাঁরা বাংলা ভাগ চাইছেন, সেটা তাঁদের বিচ্যুতি।
তবে প্রকাশ্যে বাংলা ভাগের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিজেপির মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ, বহরমপুরের বিধায়ক সুব্রত মৈত্র, কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণু প্রসাদ শর্মা।
এ ঘটনায় মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে গৌরী শঙ্কর ও সুব্রত মৈত্রর পা ভেঙে দেব।’
ভারতের লোকসভায় গত বৃহস্পতিবার জিরো আওয়ারে বিজেপির সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু–অধ্যুষিত দুই জেলা মুর্শিদাবাদ ও মালদহ এবং পার্শ্ববর্তী বিহার রাজ্যের একই জনবিন্যাসের সেখানকার মুসলিম–অধ্যুষিত চার জেলা কিষানগঞ্জ, আরারিয়া, পূর্ণিয়া ও কাটিহার—এই ছয় জেলা নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার দাবি তোলেন।