ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেছেন, দেশটির রেলওয়ে বোর্ড ওডিশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) তদন্ত চায়। আজ রোবার তিনি এ কথা বলেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওডিশা রাজ্যের বালাসোরের বাহানাগায় এই ট্রেন দুর্ঘটনায় আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার করমন্ডল এক্সপ্রেস ও যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের বগির ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে আরও পাঁচজনের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার হয়।
রোববার সাংবাদিকদের অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, উদ্ধারকাজ শেষ। এখন রেললাইন ও বৈদ্যুতির তার মেরামতের কাজ চলছে। দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব আরও বলেন, যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেলওয়ে বোর্ড পরামর্শ দিয়েছে দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করুক সিবিআই।
দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়, রেলওয়ে বোর্ডের সংকেতবিষয়ক মুখ্য নির্বাহী পরিচালক সন্দীপ মাথুর এবং পরিচালন ও ব্যবসা উন্নয়নবিষয়ক কমিটির সদস্য জয়া ভার্মা সিনহা দুর্ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, ভারতের ওডিশায় দুর্ঘটনাকবলিত করমন্ডল এক্সপ্রেস বালাসোরের বাহানাগা স্টেশন এলাকায় বাড়তি লাইনে (লুপ লাইন) প্রবেশের জন্য সবুজসংকেত পেয়েছিল। এ সময় ট্রেনটির অতিরিক্ত গতি ছিল না।
জয়া ভার্মা সিনহা বলেছেন, প্রাথমিকভাবে যেটা পাওয়া গেছে, তা হলো সংকেতের বিষয়। তিনি বলেন, করমন্ডল এক্সপ্রেস মালবাহী ট্রেনের ওপর পড়ে ও এর কোচগুলো ওই ট্রেনের ওপর উঠে যায়। মালবাহী ট্রেনটিতে লোহা বোঝাই ছিল। সে কারণে সেটি ছিল খুবই ভারী। এতে সংঘর্ষের পুরো আঘাত সেটি সামলে নেয়। ফলে করমন্ডল এক্সপ্রেসের বগিগুলো উল্টে গিয়ে তৃতীয় লাইনে পড়ে এবং সেগুলো বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রেনের কয়েকটি বগির সঙ্গে ধাক্কা খায়।
ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের পুলিশ কর্মকর্তা প্রতীক গীতা সিং জানান, গত শুক্রবার ৩টি ট্রেনের সংঘর্ষে নিহত ১৬০ জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা যায়নি। এর মধ্যে ১০০ লাশ ভুবনেশ্বরের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে (এআইআইএমএস) রাখা হবে। বাকি লাশগুলো ভুবনেশ্বরের বিভিন্ন হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজে রাখা হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পাটনায়েক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনাকে তাঁরা দেশের সবচেয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।