কলকাতার আর জি কর হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে আমরণ অনশনরত নবীন চিকিৎসকদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনে সরকারের মুখ্য সচিব মনোজ পাণ্ডের ডাকে এ বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে এই চিকিৎসকেরা সরকারের মৌখিক আশ্বাস না মেনে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
জুনিয়র চিকিৎসকেরা বৈঠক শেষে বের হয়ে বলেন, বৈঠক সফল হয়নি। কেবল মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এ আশ্বাস তাঁরা মানেন না। তাঁরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাবেন। কারণ, বৈঠকে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সরকারের অবস্থান ছিল অনমনীয়। সেখানে নতুন কিছু বলা হয়নি। সরকার ১০ দফা দাবির পক্ষে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রাজ্য সরকার পুলিশকে দিয়ে আন্দোলন রুখতে পারবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
কলকাতার ধর্মতলায় বুধবার ষষ্ঠ দিনের মতো ১০ দফা দাবিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশন হয়। গত শনিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে সাতজন চিকিৎসক এ অনশন শুরু করেন। গতকাল অনশনরত কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সিনিয়র চিকিৎসকদের গণ–ইস্তফাও অব্যাহত আছে।
মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস অনশন মঞ্চে গিয়ে অসুস্থ চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। এদিন প্রখ্যাত অভিনেত্রী অপর্ণা সেনও মঞ্চে গিয়ে অনশনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনশন মঞ্চে আসার অনুরোধও জানান।
অন্যদিকে গতকাল বিকেলে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে জুনিয়র চিকিৎসকদের ঘোষিত ‘অভয়া পরিক্রমা’য় বাধা দেয় পুলিশ। সন্ধ্যায় ম্যাডক্স স্কয়ারের পূজামণ্ডপে গিয়ে তারা আর জি কর কাণ্ডে নিহত নারী চিকিৎসকের স্মরণে প্রচারপত্র বিলি করেন এবং বিচার চেয়ে স্লোগান দেন। পরবর্তীকালে দক্ষিণ কলকাতার ত্রিধারা সম্মিলনীর পূজামণ্ডপে গিয়ে প্রচারপত্র বিলি করার সময় পুলিশ ৯ জনকে আটক করে লালবাজার পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা রাতেই তাঁদের মুক্তির দাবি তোলেন এবং লাল বাজারের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করেন। দুপুরে আটক ব্যক্তিদের আলীপুর আদালতে হাজির করা হয়।