রাহুল গান্ধীর চলমান ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ কেন্দ্র করে আসামে হামলার অভিযোগ করেছে কংগ্রেস
রাহুল গান্ধীর চলমান ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ কেন্দ্র করে আসামে হামলার অভিযোগ করেছে কংগ্রেস

আসামে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের ওপর হামলার অভিযোগ

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর চলমান ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’কে কেন্দ্র করে রোববার সারা দিনই আসামে বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে। একদিকে দলের রাজ্য সভাপতি ভূপেন বরাকে আক্রমণ করার পাশাপাশি জাতীয় স্তরে দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস।

পাশাপাশি রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, তাঁদের যাত্রা এবং মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে রোধ না করতে পেরে এখন সরাসরি তাঁদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে বিজেপি। এ ছাড়া অন্যত্র কংগ্রেস আক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।

রোববার আসামের শনিতপুর জেলায় পদযাত্রা চলাকালীন পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে গাড়ি থেকে নেমে বিজেপির সমর্থকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করেন রাহুল গান্ধী। বিজেপি সমর্থকেরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম করে স্লোগান দিচ্ছিলেন। পরে রাহুল জানান, তিনি গাড়ি থেকে নামার পরে বিজেপির সমর্থকেরা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান।

কংগ্রেসের অভিযোগ, শনিতপুর জেলায় আসাম কংগ্রেসের সভাপতি ভূপেন বরার ওপর হামলা হয়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে জেলার জামুগুড়িহাটে আক্রমণ করা হয়।

তবে ভূপেন বরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেসের এক মুখপাত্র।

হামলার সত্যতা স্বীকার করেছেন শনিতপুর পুলিশ সুপার সুশান্ত বিশ্বশর্মা। তিনি প্রচারমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কংগ্রেসের অভিযোগ, জাতীয় স্তরে দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে শনিতপুর জেলায়।

সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির যোগাযোগ সমন্বয়কারী মহিমা সিং সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, রমেশের গাড়ি থেকে পদযাত্রার স্টিকার ছিঁড়ে ফেলা হয়। হামলাকারীরা গাড়িতে বিজেপির পতাকা লাগানোরও চেষ্টা করে।

মহিমা সিং আরও বলেন, ওই এলাকায় বিজেপির একটি অনুষ্ঠান চলছিল। কিছু চিত্রগ্রাহক সেই ছবি তুলতে গাড়ি থেকে নেমেছিলেন। সেই সময় তাঁদের এবং রমেশের ওপর হামলা চালানো হয়।

গত শুক্রবার থেকেই কংগ্রেসের মিছিলের ওপরে হামলা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে পদযাত্রার প্রচারের সামগ্রী ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ।

এদিকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, সোমবার রামমন্দির উদ্বোধনের দিনে রাহুল গান্ধী ষোড়শ শতকের অসমিয়া সাধক এবং সমাজসংস্কারক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের জন্মস্থান বটদ্রবা থান পরিদর্শন করতে পারবেন না। বটদ্রবায় মঠ ও মন্দির পরিচালনা কমিটিও রাহুল গান্ধীকে সোমবার নগাঁও জেলার বটদ্রবায় পরিদর্শনে যেতে নিষেধ করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা অবশ্য শুধু রাহুল গান্ধীকে বটদ্রবায় যেতে নিষেধই করেননি, তিনি রোববার বলেছেন রাহুল গান্ধী এমন পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছেন যা ১৯৮৩ সালে রাজ্যে নেলি গণহত্যার কারণ হয়েছিল। ১৯৮৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আসামের মরিগাঁও জেলায় (বর্তমানে নগাঁও) নেলি গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল। এর জেরে সেখানে বহিরাগত বিরোধী আন্দোলনের মধ্যে প্রায় ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের অধিকাংশই ছিলেন বাঙালি মুসলমান।

সেই প্রসঙ্গ টেনে বিশ্বশর্মা বলেছেন, রাহুল গান্ধী ইচ্ছাকৃতভাবে মরিগাঁও এবং আশপাশের অঞ্চল থাকার জন্য বেছে নিয়েছেন, যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ৬০ শতাংশের বেশি।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা রাম লালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করছি, কিন্তু রাহুল গান্ধী সম্প্রদায়কে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা অশান্তি দেখলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে কমান্ডো ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করব।’