লোকসভা নির্বাচন

৪২ আসনের ৩৮টিতেই জয়ের আভাস তৃণমূলের

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ছবি: রয়টার্স

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে উত্তাল রাজ্যের রাজনীতি। দলটির নেতাদের দুর্নীতির খবর প্রায় প্রতিদিনই শিরোনাম হচ্ছে। এরই মধ্যে নিজেদের চালানো এক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে হইচই ফেল দিয়েছে দলটি। জরিপ অনুযায়ী, এই মুহূর্তে লোকসভা নির্বাচন হলে রাজ্যের ৪২টি আসনের ৩৮টিই পাবে তৃণমূল।

বিগত লোকসভা নির্বাচনে ২২টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পেয়েছিল ১৮টি আসন। ফলে দুর্নীতির এই ডামাডোলের মধ্যে তৃণমূলের জরিপের ফলাফলকে ‘ভিত্তিহীন’ ও নেতা-কর্মীদের ‘মনোবল চাঙা রাখার কৌশল’ বলছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত জরিপের ফলাফলে দাবি করা হয়, এই মুহূর্তে এই রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে নির্বাচন হলে ৩৮টি আসনেই জিতবে তৃণমূল। আর বিজেপি জিতবে মাত্র চারটি আসনে। আসন চারটি হলো আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, রানাঘাট ও পুরুলিয়া। তবে কংগ্রেসসহ অন্য দলগুলোর ভাগ্যে কোনো আসন জুটবে না।

সর্বশেষ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ২২টি আসন আর বিজেপি পেয়েছিল ১৮টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছিল ২টি আসন। তবে বাম দলের ভাগ্যে কোনো আসন জোটেনি।

২০২৪ সালের মার্চ-এপ্রিলে এই রাজ্যের লোকসভা আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু প্রায় দেড় বছর আগেই তৃণমূল হঠাৎ দলীয় স্তরে এই সমীক্ষা চালাল। রাজনীতির ময়দানে চমক দিয়ে দলটি জানান দিয়েছে, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে কার্যত তারাই জিততে চলেছে।

তৃণমূলের জরিপ ও ফলাফল প্রকাশের সময়টা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। স্কুলশিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে গত ২৩ জুলাই গ্রেপ্তার হন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে গ্রেপ্তার হন তাঁরই সহযোগী ও বান্ধবী হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। অর্পিতার বেলেঘাটা ও টালীগঞ্জের আবাসন থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) উদ্ধার করেছে প্রায় ৫০ কোটি রুপি। সেই সঙ্গে হদিস পেয়েছে নয়টি আবাসন, প্রচুর পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রারও।

এ ছাড়া গতকাল সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) দুই উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও অশোক সাহাকে। তাঁরা এখন সিবিআইয়ের হেফাজতে রয়েছেন।

চলমান এসব ঘটনার মধ্যে দলীয় স্তরে আগাম এই সমীক্ষা চালিয়ে তৃণমূল জানিয়ে দিয়েছে, যত নেতিবাচক প্রচারই করুক না কেন, পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতবে রাজ্যের শাসক দলই।

এদিকে তৃণমূলের নিজেদের চালানো এই সমীক্ষাকে আদৌ পাত্তা দিচ্ছে না বিজেপি। দলটির নেতাদের দাবি, তৃণমূল সমীক্ষার নামে নতুন করে দলকে চাঙা রাখতে উদ্যোগী হয়েছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জরিপের ফলাফলকে ‘অবিশ্বাস্য ও ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২০১৯ সালের চেয়ে বেশি আসনে জিতবে। বিজেপি এই রাজ্যে ২৫টি আসন পাবে। তিনি আরও বলেন, যেভাবে এই রাজ্যে তৃণমূলের একের পর এক দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসছে, তাতে তৃণমূলের অবস্থা কী হতে পারে বা কোন স্তরে গিয়ে পৌঁছাবে, বরং তা নিয়ে তাদের সমীক্ষা চালানো প্রয়োজন।