কলকাতায় আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। গত শুক্রবার এই হাসপাতাল থেকে এক নারী চিকিৎসকের (৩১) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গজুড়ে আন্দোলন চলছে। গত রাতেও রাজপথে বিক্ষোভ হয়েছে।
রাতে একদল বিক্ষোভকারী জোর করে আর জি কর হাসপাতালে ঢুকে যান। চালানো হয় ব্যাপক ভাঙচুর। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের খবর, আন্দোলনরত চিকিৎসকদের ছাউনি এ সময় ভাঙচুর করা হয়।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন।
এই ভাঙচুরের পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আক্রোশপূর্ণ প্রচারণাকে’ দায়ী করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার ভিনেত গয়াল। তিনি বলেন, ‘এখানে যা ঘটেছে, সেটা ভুল প্রচারণার কারণে। এটা আক্রোশপূর্ণ...কলকাতা পুলিশ কী করেনি? এ ঘটনায় সবকিছুই করা হয়েছে। আমরা ভুক্তভোগীর পরিবারকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু নানা গুজব ছড়িয়েছে...এসবে আমি খুবই রাগান্বিত। আমরা কোনো ভুল করিনি।’
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ‘রাতের দখল নাও’ কর্মসূচি পালন করেন নারীরা। বিচারের দাবিতে রাত ১২টার আগেই শুরু হয় নারীদের মিছিল।
নিহত ওই চিকিৎসকের বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার সোদপুরে। তাঁর মা-বাবা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে তাঁদের মেয়ের ডিউটি ছিল। দিবাগত রাত দুইটায় নৈশভোজ সেরে জরুরি বিভাগের চারতলায় একটি সম্মেলনকক্ষে বিশ্রাম নিতে যান। গত শুক্রবার সকালে সেখানে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওই চিকিৎসকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে শ্বাসরোধ করার প্রমাণও পাওয়া গেছে। শরীরে পাওয়া গেছে রক্তক্ষরণের চিহ্ন। এসব তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। গড়ে তোলা হয়েছে পুলিশের একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি।