তুমুল বিতর্কের মধ্যে আজ শুক্রবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে কংগ্রেস দেশের সম্পদ মুসলমানদের মধ্যে বাঁটোয়ারা করে দেবে জানিয়ে সেই বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই। কয়েক দিন ধরেই ওই বিতর্ক ঘিরে ভোটের রাজনীতি সরগরম।
প্রথম দফার ভোটের শতাংশের হার বিজেপিকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সেই চিন্তা দূর করাই ওই ‘অনাবশ্যক’ বিতর্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্য বলে বিরোধীদের অভিযোগ। আজ শুক্রবার ভোট হচ্ছে লোকসভার ৮৮ আসনে। প্রথম দফায় ১০২ আসনে ভোট হয়েছিল।
দ্বিতীয় দফার ভোট হচ্ছে কেরালার ২০ আসনে, যেখানে লড়াই প্রধানত বামপন্থীদের সঙ্গে কংগ্রেসের। বিজেপি দক্ষিণের এই রাজ্যে তৃতীয় শক্তি হিসেবে মাথাচাড়া দিয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো আসন জিততে পারেনি। কংগ্রেস ও বামপন্থীরা রাজ্যে পরস্পরের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও সর্বভারতীয় স্তরে দুজনই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক ও বিজেপিবিরোধী। অতএব কেরালায় যারাই জিতুক, তা ইন্ডিয়া জোটের পাওনার ঘরই ভারী করবে।
কেরালার লাগোয়া কর্ণাটকের ১৪ আসনেও ভোট হচ্ছে আজ। রাজ্যের মোট আসন ২৮। তার মধ্যে আগের লোকসভা ভোটে বিজেপি জিতেছিল ২৫টি। বিজেপির হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে কংগ্রেস ওই রাজ্য শাসন করছে গত বছর থেকে। মরিয়া বিজেপি হাত মিলিয়েছে রাজ্যের তৃতীয় শক্তি জেডিএসের সঙ্গে। ৪০০ আসনের লক্ষ্য ছুঁতে গেলে বিজেপির কাছে কর্ণাটকে ভালো ফল করা জরুরি।
প্রথম দফায় রাজস্থানে ভোট হয়েছিল ১২ আসনে। আজ বাকি ১৩ আসনে ভোট। এই রাজ্যেও বিজেপি গেলবার সব কটি আসন জিতেছিল। ভোট হচ্ছে মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশের ৮টি করে আসনে। সেই সঙ্গে ভোট মধ্যপ্রদেশের ৭, বিহার ও আসামের ৫টি করে আসনে। ছত্তিশগড় ও পশ্চিমবঙ্গের ৩টি করে আসনেও ভোট আজ। এর বাইরে মণিপুর, ত্রিপুরা ও জম্মু-কাশ্মীরের ১টি করে আসনে ভোট হচ্ছে। কেরালা, কর্ণাটক ও পশ্চিমবঙ্গ বাদ দিলে বাকি সব রাজ্যেই বিজেপি হয় একা অথবা সঙ্গীদের নিয়ে ক্ষমতায়।
‘চার শ পার’ স্লোগান সার্থক করার অর্থ প্রতি রাজ্যে আগেরবারের চেয়েও বেশি আসন জেতা। তবে প্রথম ধাপে ভোটের হার ছিল কম। কোনো কোনো রাজ্যে গতবারের তুলনায় ৮ শতাংশ পর্যন্ত ভোট কম পড়েছে। বরং ভোটের লাইনে মুসলমানদের উপস্থিতি বেশি নজরে পড়েছিল। এসব লক্ষণ মোদি-বিরোধিতার নমুনা বলে বিরোধীরা প্রচার শুরু করা মাত্র প্রধানমন্ত্রী ‘কংগ্রেস-মুসলমান আঁতাত’ নিয়ে সরব হন।
ভোটে লড়ছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি রাজা ও বিজেপির কে সুন্দরম। ওই রাজ্যেরই তিরুবনন্তপুরমের প্রার্থী কংগ্রেসের শশী থারুর। তাঁর চ্যালেঞ্জার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
উত্তর প্রদেশের মথুরা থেকে এবারও বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী হেমা মালিনী। মীরাটে বিজেপির প্রার্থী অরুণ গোভিল, যিনি দূরদর্শনে প্রচারিত রামায়ণ ধারাবাহিকে রামের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।