দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই)। গতকাল রোববার মদ নীতিমালা-সংক্রান্ত মামলা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কেজরিওয়ালকে মামলার একজন সাক্ষী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, একটি দলকে সুবিধা নিতে এই মদ নীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল। সিবিআই কেজরিওয়ালকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেনি।
দিল্লির লোধি রোডের কাছে সিবিআইয়ের সদর দপ্তর থেকে বাড়ি ফেরার পর কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, সিবিআই তাঁকে ৫৬টি প্রশ্ন করেছে। সবকিছুই ভুয়া বলে তিনি অভিযোগ করেন। কেজরিওয়াল বলেন, মামলাটি ভুয়া। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আমাদের বিষয়ে তাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই।’
কেজরিওয়ালের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াকেও গত মাসে একই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
কেজরিওয়াল বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ে সিবিআই আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সে বছর মদ নীতি কার্যকর করা হয়।’ আজ আম আদমি পার্টির সরকারের ডাকা দিল্লি বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে এ বিষয়ে আরও আলোচনা করবেন বলে জানান কেজরিওয়াল।
কেজরিওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘মদ নীতি মিথ্যা ও ভুয়া। আমাদের আদর্শ হলো সততা। আমরা মরতে পারি, তবু সততার ক্ষেত্রে সমঝোতা করব না। তারা আমাদের ভালো কাজের অবমূল্যায়ন করতে এসব করছে। আমরা এখন জাতীয় দল। তারা আমাদের শেষ করে দিতে এসব করছে।’
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে এএনআইয়ের খবর বলছে, সিবিআই কেজরিওয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় আম আদমি পার্টি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছে। গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় এই বৈঠক করছে দলটি।
সিবিআই কার্যালয়ের কাছে বিক্ষোভ করায় এএপি নেতা রাঘব চাড্ডা ও সঞ্জয় সিংকে দিল্লি পুলিশ আটক করেছে। কার্যালয় থেকে কেজরিওয়াল বের হয়ে যাওয়ার পরপরই অবশ্য তাঁদের মুক্ত করে দেওয়া হয়।
চাড্ডা বলেছেন, ‘বিজেপি কেজরিওয়াল আতঙ্কে ভুগছে। কেজরিওয়ালের ভয়েই বিজেপি এমন একটা কাজে নেমে পড়েছে। এটা খুবই কাপুরুষোচিত কাজ। আমরা কারাগারে যাওয়ার ভয়ে ভীত নই।’
কেজরিওয়ালকে এমন সময় তলব করা হলো, যখন তাঁর দল আম আদমি পার্টি নিজেদের জাতীয়ভাবে মোদির দল বিজেপির প্রধান বিকল্প হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
এনডিটিভির আগের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বছর দিল্লি সরকার আবগারি নীতি বদল করে। সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে মদ বিক্রির বেসরকারীকরণ করা হয়। কেজরিওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, এ নীতিমালা সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় বেসরকারি খুচরা বিক্রেতারা ফায়দা লুটবেন।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে একই মামলায় দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা মনীশ সিসোদিয়াকে গ্রেপ্তার করে সিবিআই।