পাকিস্তানের আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) কার্যক্রম এগোচ্ছে না। সংস্থাটি গতিশীল না হওয়ার এটাই প্রধান কারণ।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আজ শনিবার নয়াদিল্লিতে এক বক্তৃতায় এ অভিযোগ করেছেন। সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান যাবেন জয়শঙ্কর। এ সফরের অল্প কিছুদিন আগে তাঁর এ মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ।
আজ নয়াদিল্লিতে আইসি সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স আয়োজিত সরদার প্যাটেল বক্তৃতায় জয়শঙ্কর বলেন, ‘এ মুহূর্তে সার্ক এগোচ্ছে না। সার্কের কোনো সভা না হওয়ার কারণ বেশ সোজা। সার্কের একটি সদস্যরাষ্ট্র সংস্থাটির অন্তত আরও একটি সদস্যের বিরুদ্ধে আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। দেশটি হয়তো আরও বেশি সদস্যরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একই ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা (সন্ত্রাসবাদ) নিয়ে একটি বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা সত্ত্বেও আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশ যদি তা অব্যাহত রাখে, তাহলে তো সার্কের মধ্যে স্বাভাবিক ব্যবসা-বাণিজ্য চলতে পারে না। এ কারণেই গত কয়েক বছরে সার্কের কোনো সভা হয়নি। কিন্তু তার অর্থ এই না যে আঞ্চলিক কার্যক্রম থেমে আছে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে গত পাঁচ-ছয় বছরে ভারতীয় উপমহাদেশে আঞ্চলিক সমন্বয়মূলক কার্যক্রম বেড়েছে। এ সময়ে আমরা ভারতের অংশগ্রহণ (বাড়তে) দেখেছি। আজ আপনি যদি বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন, সেখানে নতুন সড়ক নির্মাণ ও ফেরি চালু করা হয়েছে। এসব দেশে (ভারত থেকে) সার রপ্তানি হচ্ছে। আমি বলব, আশপাশের দেশগুলোতে যেসব (উন্নয়ন ও সহযোগিতামূলক কাজ) হচ্ছে, তা (আমাদের) ‘প্রতিবেশী প্রথম নীতি’র কারণে হচ্ছে।”
বক্তৃতায় জয়শঙ্কর আঞ্চলিক বিষয়ের পাশাপাশি চলমান বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্য এখন একটি বড় উদ্বেগ ও গভীর আতঙ্কের কারণ। অঞ্চলটিতে সংঘাতের বিস্তৃত হচ্ছে। প্রথমে সেখানে সন্ত্রাসী হামলা হলো। তার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু হলো। এতে গাজায় কী হলো, তা তো আমরা দেখলাম। এখন আমরা লেবানন-ইসরায়েল ও ইসরায়েল-ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা দেখছি।’
মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত নিয়ে কথা বলার পর ইউক্রেন–রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়েও কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিশ্বায়নের এ যুগে এসব যুদ্ধ সবাইকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তার বিভিন্ন দিক তিনি তুলে ধরেছেন। নিজেদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন জয়শঙ্কর।