জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞানবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানাতে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গে মহামিছিল আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর ইউনেসকো শারদীয় দুর্গোৎসবকে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এই আয়োজন।
আজ সোমবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে কলকাতার পূজা উদ্যাপন কমিটির সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এ ঘোষণা দেন।
ঘোষণা অনুযায়ী, মিছিল কবিগুরুর জোড়াসাঁকোর বাসভবন থেকে শুরু হবে। শেষ হবে ধর্মতলায়। শিশু, তরুণ–তরুণীসহ কয়েক হাজার মানুষের সঙ্গে মিছিলে কলকাতার বিভিন্ন পূজা উদ্যাপন কমিটির সদস্যরা এতে অংশ নেবেন। এই আনন্দমিছিল হবে বর্ণাঢ্য। মিছিলে নাচ, গান, পথনাটকও হবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসামসহ প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই বাঙালিরা এই উৎসবে মেতে ওঠেন। বাঙালি হিন্দুদের কাছে শারদীয় দুর্গোৎসব সর্বজনীন হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল।
দুর্গাপূজাকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী উৎসব হিসেবে স্বীকৃতি দিতে গত বছরের আগস্টে ইউনেসকোর কাছে আবেদন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। দুর্গাপূজার আন্তর্জাতিক এ স্বীকৃতি পেতে আবেদন করা হয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। মন্ত্রণালয় সেই আবেদনপত্র পৌঁছে দেয় ইউনেস্কোর কাছে।
ইউনেসকোর স্বীকৃত পাওয়া বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী উৎসব আছে ছয়টি। এগুলো হলো সুইজারল্যান্ডের বাস্ল কার্নিভ্যাল, বেলজিয়ামের কার্নিভ্যাল অব বেঁশ, ফ্রান্সের কার্নিভ্যাল অব গ্র্যানভিল, বলিভিয়ার কার্নিভ্যাল অব ওরুরো, ব্রাজিলের ফ্রেভো পারফর্মিং আর্টস কার্নিভ্যাল অব রেসিফি এবং কলম্বিয়ার কার্নিভ্যাল অব বারানকিয়া।
কলকাতার পূজা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছেন, এবার কলকাতার দুর্গাপূজার উৎসব অনুষ্ঠিত হবে ৮ অক্টোবর। গতবার ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়া হলেও এবার রাজ্যের পূজা উদ্যাপন কমিটিগুলোকে ৬০ হাজার রুপি করে অনুদান দেওয়া হবে। এ ছাড়া পূজামণ্ডপের বিদ্যুৎ বিলে ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে সরকারি হিসাবে ৪৩ হাজার সর্বজনীন পূজার নিবন্ধন আছে।