পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সাবেক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা উন্মোচনে কঠোর সমালোচনা করেছে বিজেপি। দলটির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, এটি কেবল শুরু। এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। তিনি বলেছেন, এ দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পৃক্ততা আছে।
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গত ২৩ জুলাই ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন ইডির হেফাজতে আছেন। সঙ্গে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সহযোগী বা ‘বান্ধবী’ হিসেবে পরিচিত অভিনেত্রী অর্পিতা মুখার্জিও। আজ শুক্রবার তাঁদের দুই দফায় ১২ দিনের ইডি হেফাজত শেষ হচ্ছে। আজই আবার তাঁদের তোলা হবে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে গড়া বিশেষ বিচারকের এজলাসে।
এদিকে পার্থ-অর্পিতাসহ তৃণমূলের এই দুর্নীতির প্রতিবাদে কদিন ধরে কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল করে যাচ্ছে বিজেপি। গতকালও তাঁরা কলকাতার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে এক প্রতিবাদ সমাবেশ করে অবিলম্বে এই দুর্নীতির দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার পদত্যাগের দাবি তুলেছে। বিজেপি নেতারা গতকাল বলেছেন, সামনে দিন আসছে মমতার সততার ফানুস ফেটে যাওয়ার। বাংলার মানুষ বুঝবে, কত সৎ রাজনীতি করেছেন তিনি! তারপরই খসে যাবে মমতার সততার মুখোশ।
গতকাল বিকেলেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সবে তো শুরু , দুটি এপিসোড হয়েছে। এখনো বহু বাকি। পার্থ-অর্পিতার ওয়েব সিরিজ হবে আরও লম্বা। আর পরের এপিসোড হবে লোমহর্ষক, ভয়ংকর। রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে আরও উদ্ধার হবে বহু নগদ টাকা আর সম্পত্তি।’
সুকান্ত মজুমদার এদিন আরও বলেছেন, ওই নেতারা পুলিশের সাহায্যে ‘গ্রিন করিডর’ করে রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদাবাজির টাকা তুলে এনে তা কলকাতায় পৌঁছায়। কোথায় সেসব রাখা হয়েছে, কারা এর সঙ্গে জড়িত, এবার তা তদন্ত করে বের করবে ইডি। তারপরই এই বাংলার মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সততার মুখোশ খসে পড়বে। মানুষ দেখবে মমতার সৎ রাজনীতির মুখোশ পরা ছবি।
গত বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার দিল্লিতে দেখা করে বিভিন্ন অভিযোগ জানিয়ে ফিরে আসেন কলকাতায়। তারপরই এসব কথা বলেন সুকান্ত মজুমদার।
মঙ্গলবার রাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও দিল্লিতে অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেন। শুভেন্দু অমিত শাহকে বলেন, শুধু পার্থ-অর্পিতাই এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন, তৃণমূলের বেশ কজন নেতা, সাংসদ, বিধায়ক ও মন্ত্রীও জড়িত। তাঁরা চাঁদা তোলার একটি দুর্নীতির চক্র চালিয়ে আসছেন। অমিত শাহর কাছে সেই শতাধিক নেতার নামের তালিকাও তুলে দিয়ে আসেন শুভেন্দু।