পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা
পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা

শান্তিনিকেতনে কাল শুরু হচ্ছে পৌষ মেলা

আগামীকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রস্মৃতিবিজড়িত শান্তিনিকেতনের ঐতিহাসিক পৌষ মেলা শুরু হচ্ছে। এবারের মেলা হচ্ছে পাঁচ বছর পর। শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠে এই মেলা চলবে ছয় দিন। এর আগে মেলা তিন দিন হতো, এবার ছয় দিন হবে।
পৌষ মেলাকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার পর এবারই প্রথম পূর্বপল্লির মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই মেলা।

প্রতিবছর ৭ পৌষ এই মেলা বসে। এই মেলা এবার ১৩০ বছরে পা দিচ্ছে। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীক্ষা দিবসকে স্মরণ করে প্রতিবছর বসে এই পৌষ মেলা। ১৩০১ বঙ্গাব্দের ১ পৌষ সূচনা হয়েছিল এই পৌষ মেলার। প্রথমে বিশ্বভারতীর কাচ মন্দিরের সামনে এক দিনের জন্য বসত এই মেলা।

আগামীকাল সকালে ঐতিহাসিক ছাতিমতলায় ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই মেলা।

এবারও প্রতিদিন এই মেলা প্রাঙ্গণের মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে অন্যান্য সংগীতের মধ্যে পল্লিগীতি, বাউল, ফকিরি, কবিগান, কীর্তন ও লোকগীতির গানের আসর আর যাত্রানুষ্ঠান।

২০১৯ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এই মেলা চলে এলেও ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকে। তারপরের দুই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্যের আপত্তিতে এই মেলা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি পূর্বপল্লির মাঠে। ওই দুই বছর বোলপুরের ডাকবাংলোর মাঠে স্থানীয় পৌরসভা ও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বিকল্প পৌষ মেলার। গত বছর বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে মেলার আয়োজন করার দায়িত্ব দিলে তা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়। তাই শেষ চার বছর জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নেয় এই মেলার। এবার আবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পূর্বপল্লির সেই মাঠে আয়োজন করেছে এই ঐতিহাসিক পৌষ মেলার।

শান্তিনিকেতনের এই পৌষ মেলা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক মহা মিলনমেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রে ভেদাভেদ থাকে না। সম্প্রীতির মেলবন্ধনে একাত্ম হয় সবাই।

এবার মেলাকে পরিবেশবান্ধব করার জন্য মেলাজুড়ে প্লাস্টিক বর্জন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বিকল্প ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়েছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ।

এবারও মেলার নিরাপত্তা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ।