ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১০৭ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাজ্যের হাথরস জেলায় প্রাণহানির এ ঘটনা ঘটে।
হিন্দু দেবতা শিবের পূজা উপলক্ষে পুণ্যার্থীরা রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে হাথরাস শহরে ওই আয়োজনে সমবেত হয়েছিলেন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
তবে এ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো নানা রকম হিসাব দিচ্ছে। এনডিটিভি জানিয়েছে, অন্তত ৮৭ জন নিহত হয়েছে। আর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের হিসাবে মারা গেছে অর্ধশতাধিক। অন্যদিকে দ্য হিন্দুর হিসাবে প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তীব্র গরমে অনুষ্ঠানস্থলে দমবন্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে সমবেত পুণ্যার্থীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। এ সময় পদদলিত হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর সেখানে সমবেত লোকজন হুড়াহুড়ি করে অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে শুরু করেন। এ সময় অনুষ্ঠানস্থলের পাশে পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত হয়ে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তি বলেন, ‘সেখানে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। বের হওয়ার কোনো উপায়ই ছিল না। এর মধ্যেই সবাই একযোগে বের হওয়ার চেষ্টা করলে একজন আরেকজনের ওপর পড়তে থাকে। আমি যখন সেখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করি, দেখি একটি মোটরসাইকেল দাঁড়ানো। পরে কোনোমতে অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হতে সমর্থ্য হই।’
পদদলিত হয়ে মৃত্যুর এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এক এক্স পোস্টে তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’
ভারতে বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় মন্দিরে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ২০১৬ সালে কেরালায় একটি মন্দিরে হিন্দুদের নতুন বছর উদ্যাপনের সময় আতশবাজির সময় ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
মধ্যপ্রদেশে ২০১৩ সালে একটি মন্দিরের কাছে সেতুতে পদদলিত হয়ে ১১৫ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়ছিল। সে সময় সেখানে চার লাখের মতো মানুষ জড়ো হয়েছিল। গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল সেতুটি ধসে পড়বে, আর তখনই এই পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ২০০৮ সালেও রাজস্থানের যোধপুরে পদদলিত হয়ে ২২৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল।