পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থার কর্ণধার যোগগুরু রামদেবকে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। পতঞ্জলি মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রামদেব ও তাঁর সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আচার্য বালকৃষ্ণকে আদালতে সশরীর হাজিরা দিতে হবে।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি এ আদেশ দেন।
আদালত অবমাননার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রামদেবের তৈরি পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থাকে গত মাসে নোটিশ দিয়ে তলব করেছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু রামদেবদের পক্ষ থেকে তা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়। সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো জবাবই দেওয়া হয়নি। বরং সংবাদ সম্মেলন করে সেই অভিযোগের জবাব দেওয়া হয়। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি ও আসানুদ্দিন আমানুল্লা এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চান। রামদেব ও বালকৃষ্ণকে তাঁরা পরবর্তী শুনানির দিন ব্যক্তিগতভাবে হাজির থাকার নির্দেশ দেন।
পতঞ্জলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা তাদের তৈরি ওষুধের বিজ্ঞাপনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে চলেছে। অন্যান্য চিকিৎসাপদ্ধতিকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে। তাদের ওই প্রচারের বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) অভিযোগও জানায়। তারা বলে, কোভিডের সময় আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রতিষেধক নিয়ে রামদেবের সংস্থা অবৈজ্ঞানিক ও মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে। তারা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের অসম্মান করেছে। কোভিড–প্রতিরোধী না হওয়া সত্ত্বেও মিথ্যা বিজ্ঞাপনী প্রচারের মাধ্যমে তাদের তৈরি ‘করোনিল কিট’ বিক্রি করে পতঞ্জলি ২৫০ কোটি রুপি মুনাফা করেছে।
ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পতঞ্জলির বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভর্ৎসনা করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছিলেন, সব জেনেশুনেও সরকার চোখ–কান বন্ধ করে ছিল। এটা খুবই দুঃখজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট তখন বলেছিলেন, মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বন্ধ না করলে পতঞ্জলিকে জরিমানার মুখে পড়তে হবে।
কোভিডের প্রতিষেধক দাবি করে পতঞ্জলি ২০২০ সালের জুন মাসে ‘করোনিল কিট’ বাজারে এনেছিল।
তাতে ছিল দুটি ট্যাবলেট ও একটি তেলের শিশি। কিটের দাম রাখা হয়েছিল ৫৪৫ রুপি। ওই বছরের ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ওই কিট বিক্রি হয়েছিল সাড়ে ২৩ লাখ। অভিযোগ, সবটাই ছিল মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারের মাধ্যমে।